পাতা:হরিষে-বিষাদ.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* হরিষে বিষাদ । - রামহরি কাগজ পড়িতে পড়িতে যে সব কথা কহে তাহ গুনিয়া মাঝে মাঝে নলিনের শরীর শিহরিয়া উঠে। রামহরি কখন লাটসাহেবকে বোকা বলে, কখন স্বার্থপর বলে, কখন বা মিথ্যাবাদী বলে । নলিন শুনিয়া অবাক হইয়া থাকে। সাহস করিয়া তাহার প্রতিবাদ করা দূরে থাকুক, লাট সাহেব কেন বোকা, কি বোকামি করিয়াছেন, কোথায় কাহার নিকট মিথ্যা কথা কহিয়াছেন তাহাও জিজ্ঞাসা করিতে পারেন না। রামহরি দুই এক দিবস এরূপ গরম হইয় উঠে যে নলিনের বোধ হয় লাট সাহেব কাছে থাকিলে রামহরি বা দু এক থা তাহাকেই বসাইয়া দেয়। নলিন খববের কাগজ পড়ে বটে কিন্তু যে স্থানে সমাচার থাকে সেই স্থানই পড়ে। কোথায় কাহার গরুর দুটা বাছুর হইল, বা ছটা মাথাওয়াল একটা বাছুর হইল, কোথায় ঝড়ে কোন নৌকা মারা গেল, কোথায় গৃহ দাহ হইয়া কাহার সর্বনাশ হইল এইসমস্তই সমাচার। নলিন এই সমস্তই আগ্রহ সহকারে পড়ে ও যত্ন পূৰ্ব্বক কণ্ঠস্থ করিয়া রাখে। রামহরি যে যে স্থান পড়িয়া প্রত্যহ এত গরম হয়, নলিনের সে সব স্থান পড়িতে ভাল লাগে না। এক দিবস নলিন ভীত চিত্তে জিজ্ঞাসা করিল “রামহরি বাবু লাটসাহেব বোক আপনি কেমন করে টের পেলেন ? আর লাটসাহেববেকাহলে এত বড় দেশ শাসন করে কেমুন করে ?” রামহরি উত্তর করিল “লাট সাহেব বোকা না ? আজকার কাগজে কি পড়লে ?” - নলিন। কৈ আমি তো কিছু টের পেলাম না। আমাকে যায়গাটা দেখিয়ে দেও দেখি ?