পাতা:হলুদ পোড়া - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হলুদ পোড়া , 38ዓ দখল করে আমি একা শুয়ে থাকবে। আর ওরা কেউ শোবার যায়গা পাবেMনা ! ওদের সঙ্গেই খাটে শোয়া চলে। কিনা একবার বিবেচনা একুরে দেখলাম, কিন্তু সেটাও সম্ভব মনে হল না। কাঠের সিন্দুকের উপরে বসে খাটের জোরালো গন্ধটা অনুভব করছিলাম, ছেলেমেয়েদের সরিয়ে নতুন চাদর বিছিয়ে দিলেও গন্ধটা অন্তর্ধান করবে বলে ভরসা। হল না । ভেবে চিন্তে বললাম, “এক কাজ করা যাক আসুন। আপনি খাটে “খোকাণ্ডুকীদের কাছে শোবেন যান, আমি এখানে শুয়ে থাকি।” “আপনি কি এখানে শুতে পারবেন মশায় ! পা বেরিয়ে যাবে।” আমি হেসে বললাম, ‘একটু পা বেরিয়ে থাকলে কিছু আসবে বাবে না।” লোকটি গম্ভীর চিন্তিত মুখে বলল, “তা’ছাড়া সে বড় হাঙ্গামা ।” অতগুলি ঘুমন্ত ছেলেমেয়েকে তুলে খাট খালি করার চেয়ে এ ব্যবস্থার হাঙ্গামা বেশী হওয়া কি করে সম্ভব কোন মতেই ভেবে পেলাম না। লোকটি অন্যমনস্কভাবে বলতে লাগল, “কি জানেস, আমাকে তাহলে আপনার ধরাধরি করে খাটে নিয়ে যেতে হবে, উনি এক পারবেন না।” কাপড় তুলে ধরতে দেখলাম হাঁটুর, নীচে থেকে দুটি পাই ভদ্রলোকের কাটা । ‘সিন্দুকের ওপরে শুতে আমার অসুবিধে নেই, পা বেরিয়ে भूब मl। 'আপনি স্তুবিশ্যি এতক্ষণ ভাবছিলেন, বাড়ীতে অতিথি এলো আর এ ব্যাটা দিব্যি আরাম করে” সিন্দুকের ওপর গাট হয়ে বসে আছে। কি করব মশায়, নামবার ক্ষমতা থাকলে তো নামিব।” আমি বললাম, ‘আহা, আপনার তো বড় কষ্ট । ঘর চাপা পড়ে। পা ভেঙেছিল বুঝি ?”