[ ১৫ ]
সঅল সমাহিঅ কাহি করিঅই।
সুখ দুখেতেঁ নিচিত মরি আই॥
এড়িএউ ছান্দক বান্ধ করণক পাটের আস।
সুনুপাখ ভিতি লাহুরে পাস॥
ভণই লুই আম্হে সাণে দিঠা।
ধমণ চমণ বেণি পণ্ডি বইঠা॥ [পত্রাঙ্ক ১]
দেহ তরুবর, তাহাতে পাঁচটি ডাল আছে। চঞ্চল চিত্তে কাল প্রবেশ করিল; লুই বলেন,—মহাসুখের পরিমাণ দেখিয়া, উহা কি, গুরুকে জিজ্ঞাসা করিয়া লও। যত রকম সমাধি আছে, তাহার দ্বারা কি হইবে? সে সকল সমাধি করিলে সুখ ও দুঃখে নিশ্চয়ই মারা যাইবে। ছন্দের বন্ধন ও করণের পরিপাটী পরিত্যাগ করিয়া শূন্যপক্ষরূপ ভিত্তিকে লইয়া আইস। লুই বলিতেছেন,—আমি পণ্ডিতের বচনানুসারে দেখিয়াছি, ধমণ ও চমণ অর্থাৎ আলি ও কালি, এই উভয়ে আসন করিয়া আমার দেবতা বসিয়া আছেন।
তেঙ্গুরের যতটুকু ক্যাটালগ বাহির হইয়াছে, তাহাতে লেখা আছে, লুই বাঙ্গালা দেশের লোক, তাঁহার আর একটি নাম মৎস্যান্ত্রাদ। রাঢ়দেশে যাহারা ধর্ম্মঠাকুরের পূজা করে, তাহার এখনও তাঁহার নামে পাঁঠা ছাড়িয়া দেয়। ময়ূরভঞ্জেও তাঁহার পূজা হইয়া থাকে। লুইয়ের সময় ঠিক করিতে হইলে এই কথা বলিলেই যথেষ্ট যে, তাঁহার একখানি গ্রন্থে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান সাহায্য করিয়াছেন। সে গ্রন্থখানির নাম অভিসময়বিভঙ্গ। দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ১০৩৮ সালে বিক্রমশীল বিহার হইতে ৫৮ বৎসর বয়সে তিব্বত যাত্রা করিয়াছিলেন।
লুই আচার্য্যের শিষ্যপরম্পরায় সিদ্ধাচার্য্য হইতেন, তন্মধ্যে দারিক নামে একজন লুইকে আপনার গুরু বলিয়া স্বীকার করিয়াছেন—
সুনকরুণরি অভিন বারেঁ কাঅবাক্চিঅ।
বিলসই দারিক গঅণত পারিম কুলেঁ॥
অলক্ষলখচিত্তা মহাসুহে।
বিলসই দারিক গঅণত পারিম কুলেঁ॥
কিন্তো মন্তে কিন্তো তন্তে কিন্তো রে ঝাণবখানে।
অপইঠান মহাসুহলীণে দুলখ পরমনিবাণেঁ॥
দুঃখেঁ সুঃখেঁ একু করিআ ভুঞ্জই ইন্দীজানী।
স্বপরাপর ন চেবই দারিক সঅলানুত্তরমাণী॥
রাআ রাআ রাআরে অবর রাঅ মোহেরা বাধা।
লুই পাঅপত্র দারিক দ্বাদশ ভুঅণে লধা॥ [পত্রাঙ্ক ৫২]