পাতা:হারানো খাতা - অনুরূপা দেবী.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
হারানাে খাতা।

খানি দানের একটু একটু প্রতিদান কাড়িয়া ছিনাইয়া লইয়া তাঁহার মুখের কাছে মুখ লইয়া গিয়া বলিল “বল রাগ ভাল হয়েছে বল। রাগ, করোনি বল্লে তো আমি মান্‌বো না, আমি জানি যে তুমি আমার উপর খুব বেশী রকম রাগ করেছিলে। এত শীগ্‌গির যে আমায় আদর করবে সে আমি একবারে ভাব্‌তেই পারিনি!”

 নরেশ তখন আদরের গৌরবে গরবিনীকে আর একটু উপরি পাওনা পাওয়াইয়া দিয়া হাসিতে হাসিতে বলিলেন “আহা, এমন জান্‌লে না হয় একটু রাগ করেই থাকতুম যে! তা আমার রাগটা কেন হয়েছিল বলো তো? আচ্ছা দাঁড়াও মনে করি। নাঃ পারলুম না। তুমিই মনে করে দাও দেখি। কিন্তু দেখ, যেন মিথ্যে করে যা তা একটা বলে দিও না।”

 পরিমলও এই কথায় অত্যন্ত কৌতুক বোধ করিয়া হাসিয়া উঠিল, এবং হাসিতে হাসিতে লুটোপুটি খাইয়া শেষে বলিল, “উনি রাগ করে জব্দ করবেন আমায়, আবার উল্টে তার হিসেব নিকেশ করতে হবে আমাকেই। এ মজা তো বড় মন্দ নয় দেখি! ঈস্, আমি বল্‌বো কেন?”

 নরেশ গাম্ভীর্যের ভাণ করিয়া বলিল, “বেশ মশাই, বেশ। না হয় বল্‌বেন না। না হয় এবার থেকে আমার রাগের হিসাব রাখবার জন্যে আর একটা হিসাবনবিশই রেখে দেবো, তার জন্য আর হয়েছে কি।”

 পরিমল আর এক চোট প্রাণ ভরিয়া হাসিল, তারপর অনেক কষ্টে হাসি থামিলে পর স্মরণ করাইয়া দিল যে, সেদিন সে নিরঞ্জনের কাছে আর পড়িবে না বলিয়াছিল, এবং তারপর হইতেই নরেশের মুখ বেজায় ভার ভার দেখা যাইতেছে।

 নরেশ তখন যেন চমক ভাঙ্গা হইয়াই বলিয়া উঠিলেন “ওহো তাও তো বটে! তাহলে এখন তাকে নিয়ে কি করা যায় বলো দেখি? ওকে তুমি যদি বরখাস্তই করলে তাহলে না হয় ওকেই আমার রাগ