পাতা:হারামণি - মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হারামণি
৭৯

এই আঁধার কাটে চক্ষু মেল;
অই ভবের হাট ভু’লোনারে মহম্মদ রছুল। 
নুহ্অল্ এছ্‌বাৎ[১] নফুয়াল্ নবি[২]
ও তোমার ফানাফাল্লা[৩] যখন হবি


  1. নুহ্অল্ এছ্‌বাৎ “নফি এছ্‌বাৎ” কথার অপভ্রংশ। ইহার ভাবার্থ ‘লাএলাহা ইল্লাল্লা’ দ্বারা নিজের নাস্তিত্ব প্রমাণ করা এবং কল্পনায় সর্ব্বত্র সেই অনাদি অনন্ত পরব্রহ্মের অসীম সৌন্দর্য্যময় অস্তিত্ব অনুভব করা।
  2. নফুয়াল্ নবি “নফিয়ন্নবি”র অপভ্রংশ—আর এক নাম “ফানাফির্‌রছুল” অর্থাৎ রছুলোল্লার (হজরত মোহাম্মদ দঃ) ধ্যান করিতে করিতে আত্মবিশ্বত হইয়া সমগ্র জগতে শুধু তাঁহারই বিকাশ উপলব্ধি করা।
  3. এসলাম ধর্ম্মমতে আধ্যাত্মিক জগতের পূর্ণ জ্ঞানলাভ করিতে হইলে, ভক্তকে সাধনার তিনটি সিঁড়ি অতিক্রম করিতে হইবে। প্রথমত: “ফানাফিশ্বেখ্” বা আপনপীরের সহিত লয় প্রাপ্তি। সত্য সনাতন নিরাকার মহাপ্রভুর দর্শন লাভাকাঙ্ক্ষায় অবশ্য পীরের ধ্যান করিতে হয়। পীর ভক্তের উদ্দেশ্য নয় – উদ্দেশ্য লাভের সহায় মাত্র। প্রথম স্তর অতিবাহিত হইলে, ঐ উদ্দেশ্য লইয়াই সিদ্ধিলাভের অপেক্ষাকৃত উৎকৃষ্ট সহায় রছুলোল্লার ধ্যান করিতে হয়। ইহার নাম “ফানাফিরসুল”। সাধনার সর্ব্বশেষক্রম ফানাফিল্লা অর্থাৎ আল্লাতে মিশিয়া যাওয়া। বহির্জগতে আত্মিকজগতে যাহা কিছু—সবই আল্লার—সবই তাঁহার নাম-গানে বিভোর। এই স্তরে উপস্থিত হইলে, সাধক আত্মজ্ঞানহীন হইয়া মহর্ষি মনসুরের মত “আনাল্ হক" বা “অহং ব্রহ্ম” বলিতে থাকেন। অনন্ত