পাতা:হারামণি - মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



১০২
হারামণি

খেলাইবার সাজসরঞ্জাম লইয়া বাহির হইল, মাটির ঘল তৈয়ারী করিল। এমন সময় নাপিত (= লাপিত) আসিয়া অনর্থক তাহার ধুলার ঘর ভাঙ্গিয়া দিল এবং তাহাকে কোলে তুলিয়া লইল। সে আশ্বাস দিয়া বলিল,

“কাদার চুকার বদলে বেহুলা সোণার চুকা দিল হে,
ধুলার ঘরের বদলে বেহুলা দালান কোঠা দিব হে।”

বোধ হয় সুন্দরী বেহুলার ঘটকের কাজ করিয়া লোভী ঘটক কিছু লাভ করিবার আশায় এই আত্মীয়তা দেখাইতেছে।

 দ্বিতীয় গানটীর মর্ম্ম অতি চমৎকার। ভাই ডোলা (=পাল্কী) সাজাইতেছে, কিন্তু কোন কিছুতেই যাইতে রাজী নহে। আমগাছ কাটিয়া ডোলা সাজাইল, জাম গাছ কাটিয়া ডোলা সাজাইল, তবু সে যাইবে না। ভাই নিরুপায় হইয়া তাহাকে নানাবিধ অলঙ্কারের প্রলোভন দেখাইল, কিন্তু তাহাতেও তাহার মন টলিল না। সে সমস্ত অলঙ্কারগুলি তাহার ভাবীসাহেবাকে দিতে বলিল। গানটীর মধ্যে অতি কচি মনের একটা বিফল প্রয়াসের করুণ ছবি পাওয়া যায়। ইহার ধুয়া, “ভায়া না যাব ডোলাতে” অতি নিবিড় ভাবে আমাদিগকে বেদনাহত করে। রবীন্দ্রনাথের “যেতে নাহি দিব” কবিতাটীর মধ্যে যে করুণ চিত্র উজ্জ্বলভাবে ধরা পড়িয়াছে, ইহার মধ্যে তেমনি একটা