পাতা:হারামণি - মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



পল্লীগানে বাঙ্গালী সভ্যতার ছাপ
১৩

আরও একটি গান পাঠকের সামনে নজির দেওয়া যাউক।

“নবি দিনের রছুল, আল্লার নাম যায় না যেন ভুল।
ভূলে গেলে মন পড়বি ফেরে হারাবি দুকুল॥
আওয়ালে আল্লার নূর  দুইয়ামে তোবার ফুল,
ছিয়ামে ময়নার গলার হার
চৌঠা ছেতায়, পঞ্চমে ময়ূর॥
আব, আতস, খাক বাতাসের ঘরে
গড়েছেন সেই মালেক মোক্তার, চারচিজে।
চার চিজে একমতন করে, দুনিয়াই করেছে স্থূল॥”

 এই ভণিতাহীন কবিতায় মুসলমানী ভাবেরই সমাবেশ। ইহার পরিভাষা (Technicalitis) না বুঝিতে পারিলে অর্থ হৃদয়ঙ্গম করা সম্ভব নহে।


    করিতে হয়। পীর ভক্তের উদ্দেশ্য নয়—উদ্দেশ্য লাভের সহায় মাত্র। প্রথম স্তর অতিবাহিত হইলে, ঐ উদ্দেশ্য লইয়াই সিদ্ধিলাভের অপেক্ষাকৃত উৎকৃষ্ট সহায় রসুলোল্লার ধ্যান করিতে হয়। ইহার নাম “ফানাফির রসুল”। সাধনার সর্ব্বশ্রেষ্ঠ ক্রম ‘ফানাফিল্লা’ অর্থাৎ আল্লাতে মিশিয়া যাওয়া। বহির্জগতে ও আত্মিক জগতে যাহা কিছু সবাই আল্লার, সবই তাঁহার নাম গানে বিভোর এই স্তরে উপস্থিত হইলে, সাধক আত্মজ্ঞানহীন হইয়া মহর্ষি মন্‌সুরের (“মহর্ষি মন্‌সুর” কবি মোজাম্মেলহক্ প্রণীত দ্রষ্টব্য।) মত “আয়নাল্ হক” বা অহং ব্রহ্ম বলিতে থাকেন। অনন্ত জ্ঞানময়ের সহিত মিশিয়া গেলে লোকের বাহ্যজ্ঞান বিলুপ্ত হয়। কি করেন,