পাতা:হারামনির অণ্বেষণ - দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२by হারামণির অন্বেষণ । না—সে বিষয়ে নিশ্চিন্ত থাকিও। মাধ্যাকৰ্ষণতত্ত্ব দুই নৌকার পা দিয়া দাড়াইয়া আছে-এক নৌকা পরীক্ষা, আর-নৌকা কল্পনা ৷ পক্ষান্তরে, ত্রিগুণতত্ত্বের মধ্যে কোনোপ্রকার কল্পনার গোজামিলন নাই—কৃত্রিম কারীকুরি নাই ; তাহা ঝরঝরে পরিষ্কার সাচা সামগ্রী। ত্রিগুণতত্ত্বের ভিতরের খবর র্যাহারা জানেন না, তাহাদের চক্ষে তাহা কল্পনার স্বপ্ন বই আর কিছুই না। যাহাঁদের চক্ষে আপাতদর্শিতার ঘুমের ঘোর অষ্টপ্রহর লাগিয়া আছে, তাহাদের চক্ষে তাহা স্বপ্ন তো বটেই ; কিন্তু আমি দেখাইব যে, অপরের চক্ষে ঠিক্‌ তাহার বিপরীত ; দেখাইব যে, জাগ্ৰংজ্ঞানের চক্ষে তাহা একটা কড়াক্কড় নিক্তির ওজনের প্রামাণিক তত্ত্ব—খাটি বৈজ্ঞানিকতত্ত্ব। অতএব প্রণিধান কর— আমাদের দেশের একটী প্রাচীন বাক্যের প্রতি শ্রদ্ধার সহিত মনোনিবেশ করিয়া তোমাকে আমি দেখিতে বলিতেছি এই যে, সমস্ত বিশ্বব্রহ্মাও সত্ত্ব, রজো এবং তমো না, এই তিন গুণের ক্রীড়াক্ষেত্রে । বিষদাত-ভাঙা সৰ্পের যেমন ফেস-কাৰ্য্য শোভা পায় না, বঙ্গভাষায় তেমি শব্দের অন্তস্থিত বিসর্গের উচ্চারণ শোভা পায় না। এ কথাটি পণ্ডিতের বোঝেন না যদি-চ, কিন্তু আর সবাই বোঝে। কোনো দরিদ্রসস্তান যদি রাজার কৃপায় সহসা ধন-ঐশ্বৰ্য্যে স্ফীত হইয়া উঠিয়া ধরা’কে সর-জ্ঞান করিতে থাকে, তবে লোক বলে “উ হার তমো হইয়াছে।” বাল্যকালে আমি একজন অৰ্দ্ধকথকের মুখে শুনিয়াছিলাম “অশ্বথামা হতে ইতি গজে৷” । আসল সংস্কৃত হচ্চে “অশ্বথামা হত:—ইতি গজঃ”; আর, আসল উচ্চারণ হচ্চে “অশ্বথামা হতহ–ইতি গজহ ।” “হত” অপেক্ষা হতে হতহ, শব্দের সহিত বেশী মিল খায়, তাহ দেখিতেই পাওয়া যাইতেছে। এরূপস্থলে পণ্ডিতাম্বমোদিত প্রথ৷ অপেক্ষ লোকমুমোদিত প্রধা বেশী শুদ্ধ। আমি অশুদ্ধ পণ্ডিতি প্রথা অপেক্ষা বিশুদ্ধ লৌকিকপ্রথা বেশী পচ্ছন্দ করি, তাই বলিবার সময় বলি এবং লিখিবার সময় লিখি তমো, রজো, নভো, সরে ইত্যাদি । Q.