পাতা:হাস্যকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভাব ও অভাব

  বশংবদ। (সভয়ে মৃদুস্বরে) আজ্ঞে, জীবন বেশ চলে যায় সত্যি কিন্তু জীবন রক্ষে হয় না— আরও কিছু খাবার আবশ্যক করে।

 কুঞ্জবিহারী। (উষ্ণভাবে) তবে তাই খাও গে যাও। কেবল মুঠো মুঠো কতকগুলো ভাত ডাল আর চচ্চড়ি গেলো গে যাও। এখানে তোমাদের অনধিকার প্রবেশ।

 বশংবদ। সেগুলো কোথায় পাওয়া যাবে মশায়! আমি এখনই যাচ্ছি।

কুঞ্জবাবুকে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইতে দেখিয়া

 কুঞ্জবাবু, আপনি ঠিক বলেছেন, আপনার এই বাগানের হাওয়া খেলেই পেট ভরে যায়। আর কিছু খেতে ইচ্ছে করে না।

 কুঞ্জবিহারী। এ কথা আপনার মুখে শুনে খুশি হলুম, এই হচ্ছে যথার্থ মামুষের মতো কথা। চলুন, বাইরে চলুন; এমন বাগান থাকতে ঘরে কেন?

 বশংবদ। চলুন।

আপন মনে মৃদুস্বরে

 হিমের সময়টা— গায়েও একখানা কাপড় নেই—

 কুঞ্জবিহারী। বা— শরৎকালের কী মাধুরী!

 বশংবদ। তা ঠিক কথা। কিন্তু কিছু ঠাণ্ডা।

 কুঞ্জবিহারী। (গায়ে শাল টানিয়া) কিছু মাত্র ঠাণ্ডা নয়।

 বশংবদ। না ঠাণ্ডা নয়।

হিহিহি কম্পন

 কুঞ্জবিহারী। (আকাশে চাহিয়া) বা বা বা— দেখে চক্ষু জুড়োয়। খণ্ড খণ্ড সাদা মেঘগুলি নীল আকাশে সরোবরে রাজহংসের মতো ভেসে বেড়াচ্ছে আর মাঝখানে চাঁদ যেন—

২৯