পাতা:হাস্যকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হাস্যকৌতুক

  বশংবদ। (গুরুতর কাশি) খক খক খক।

 কুঞ্জবিহারী। মাঝখানে চাঁদ যেন—

 বশংবদ। খন খন খক খক।

 কুঞ্জবিহারী। (ঠেলা দিয়া) শুনছেন বশংবদবাবু— মাঝখানে চাঁদ যেন—

 বশংবদ। রসুন একটু— খক খক খন খন ঘড ঘড়।

 কুঞ্জবিহারী। (চটিয়া উঠিয়া) আপনি অত্যন্ত বদলোক। এ-রকম করে যদি কাশতে হয় তো আপনি ঘরের কোণে গিয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে পড়ে থাকুন। এমন বাগান—

 বশংবদ। (সভয়ে প্রাণপণে কাশি চাপিয়া) আজ্ঞে, আমার আর কিছু নেই। (স্বগত) অর্থাৎ কম্বলও নেই, কাঁথাও নেই।

 কুঞ্জবিহারী। এই শোভা দেখে আমার একটি গান মনে পড়ছে। আমি গাই—

সু-উ-উন্দর উপবন বিকশিত তরু-উগণ মনোহর বকু—

 বশংবদ। (উৎকট হাঁচি) হ্যাঁচ্ছোঃ

 কুঞ্জবিহারী। মনোহর বকু—

 বশংবদ। হ্যাঁচ্ছো। হ্যাঁচ্ছো—

 কুঞ্জবিহারী। শুনছেন? মনোহর বকু—

 বশংবদ। হ্যাঁচ্ছোঃ হ্যাঁচ্ছোঃ।

 কুঞ্জবিহারী। বেরোও আমার বাগান থেকে।

 বশংবদ। রসুন— হ্যাঁচ্ছোঃ।

 কুঞ্জবিহারী। বেরোও এখেন থেকে—

 বশংবদ। এখনি বেরোচ্ছি—আমার আর এক দণ্ডও এ বাগানে থাকবার ইচ্ছে নেই— আমি না বেরোলে আমার মহাপ্রাণী বেরোবেন।

৩০