পাতা:হাস্যকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একান্নবর্তী

দৌলতচন্দ্র ও কানাই

 দৌলত। হৃদয় যখন ভাবে উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে তখন কোম্পানির দমকল এলেও থামাতে পারে না। একান্নবর্তী পরিবার প্রথা সম্বন্ধে সভায় দাড়িয়ে অনর্গল বলতে লাগলুম, সভাপতি ঘুমিয়ে পড়াতে নিষেধ করবার কেউ রইল না। শেষকালে দুজন ছোকরা এসে দুই হাত ধরে আমাকে টেনে বসিয়ে দিলে। সেদিন এত উৎসাহ হয়েছিল।

 কানাই। বটে, তা হবার কথাই তো। তা আপনি কী বলেছিলেন?

 দৌলত। আমি বলেছিলেম স্বার্থত্যাগের একমাত্র উপায় একান্নবর্তী পরিবার। যেখানে পরের অর্থেই জীবননির্বাহ হয় সেখানে স্বার্থের কোনো প্রয়োজনই হয় না। খবরের কাগজে আমার বক্তৃতা খুব রটে গেছে— তারা সকলেই বলছে, দুঃখের বিষয় দৌলতবাবুর পরিবার কেউ নেই, তিনি একলা। (দীর্ঘনিশ্বাস)

জয়নারায়ণের প্রবেশ

 জয়নারায়ণ। জয় হোক বাবা। আমি তোমার পিসে।

 দৌলত। সে কী মশায়, আমার তো পিসি নেই।

 জয়নারায়ণ। না, তাঁর কাল হয়েছে বটে।

 দৌলত। পিসি কোনোকালেই যে ছিলেন না।

 জয়নারায়ণ। (ঈষৎ হাসিয়া) সে কী করে হয় বাবা। আমি তাহলে তোমার পিসে হলুম কী করে।

কানাইয়ের প্রতি

 কী বলেন মশাই।

৫৪