পাতা:হিন্দু অথবা প্রেসিডেন্‌সী কলেজের ইতিবৃত্ত - রাজনারায়ণ বসু.pdf/৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

( ২০ )

লেন, “আপনার রত্নমণ্ডিত টুপিটী আমাকে দিউন। কেন না, আমার ছাত্রেরা আমাকেই ইংলণ্ডের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ লোক বলিয়া জানে। আমার অপেক্ষা আর কেহ যে ইংলণ্ডে বড় লোক আছে, ইহা তাহারা জানিলে আমার মানের হানি হইবে।” বোধ হয়, কৃষ্ণমোহন বসু বুষ বি সাহেবের ন্যায় শিক্ষকের কার্য্য অত্যন্ত সম্মানের কার্য্য বলিয়া মনে করিতেন, এই জন্য ঐরূপ পোষাগ পরিতেন।

 প্রথমে ইংরাজী শিক্ষার বড় দুরবস্থা ছিল। পরে মহাত্মা হেয়ার সাহেব উদ্যোগী হইয়া সেই দুরবস্থা দূর করেন। তিনি হেয়ার স্কুল সংস্থাপন করেন এবং সর্ব্ব প্রথম হিন্দুকলেজ সংস্থাপনের প্রস্তাব করেন এবং তৎ সংস্থাপনের প্রধান উদ্যোগী ছিলেন। মহাত্মা হেয়ার সাহেবের নাম স্মরণ করিলে আমাদের হৃদয় কৃতজ্ঞতা-রসে আপ্লুত হয়। তাঁহার সম্বন্ধে আমার একখানি গ্রন্থে এই রূপ লেখা আছে।

 “ডেবিড হেয়ার এই দেশে ঘড়ির ব্যবসায় দ্বারা লক্ষ টাকা উপার্জ্জন করিয়াছিলেন। তিনি তাঁহার স্বদেশ স্কটলণ্ডে ফিরিয়া না গিয়া সেই সমস্ত অর্থ এতদ্দেশীয় লোকের হিতসাধনে ব্যয় করিয়া পরিশেষে দরিদ্র দশায় উপনীত হইয়াছিলেন। তাঁহাকে এতদ্দেশীয়দিগের ইংরাজী শিক্ষার সৃষ্টিকর্ত্তা বলিলে অত্যুক্তি হয় না। তিনি হেয়ার স্কুল সংস্থাপন করেন ও হিন্দু কলেজ সংস্থাপনের এক জন প্রধান উদ্যোগী ছিলেন। আমি এক জন তাঁহার ছাত্র ছিলাম। আমি যেন দেখিতেছি, তিনি ঔষধ হস্তে লইয়া পীড়িত বালকের শয্যার পার্শ্বদেশে দণ্ডায়মান রহিয়াছেন।