পাতা:হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা - কৈলাসবাসিনী দেবী.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা।

পদ্য রস-পরিপূরিত অভিনব পুস্তক লইয়া, সংস্কৃত শব্দার্থানভিজ্ঞ দ্বিজবরের চণ্ডীর পুথি পাঠের ন্যায় নির্জ্জন স্থানে উপবেশন করত পাঠ করিয়া থাকেন। কেহ বা বটতলাস্থ আদিরস পরিপূরিত উত্তমোত্তম গ্রন্থ গুলিন অধ্যয়ন করিয়া চপলা সম স্বীয় অস্থির চিত্তকে সুস্থির করেন; কেহ বা নাটকের চটক দর্শনে আপন বুদ্ধি শুদ্ধি করেন; কেহ এ, বি পড়ে বিবি সেজে সিন্দুর চুপড়ির অপমান করেন। এইরূপে ইহাঁরা স্ব স্ব প্রধান হইয়া অতি গম্ভীর ভাব ধারণ করত সাধারণ সন্নিধানে সম্মান প্রত্যাশা করেন, কোন বিষয়ই প্রকৃতরূপে জানিতে ইচ্ছা করেন না। কিন্তু এবিষয়ে তাঁহাদিগকে কোন ক্রমেই নিন্দা করিতে পারা যায় না, কারণ তাঁহারা কাহারও নিকট কোন প্রকার সদুপদেশ প্রাপ্ত হন না। ইহাঁদিগের মধ্যে প্রায় অনেকেই আত্মপ্রযত্নে কিঞ্চিৎ কিঞ্চিৎ শিক্ষা করিয়াছেন। আত্ম-যত্নে যাহা শিক্ষা করিয়াছেন তাহাই তাঁহাদের যথেষ্ট। শুদ্ধ যে উপদেশাভাবেই ইহাঁরা শিক্ষা করিতে পারেন না এমন নহে, তাহার উপর আবার বহুবিধ উপদ্রব উপস্থিত হয়। যে নারী বিদ্যাভ্যাসে প্রবৃত্ত হন, তিনি পরিবারস্থ সমস্ত ব্যক্তির চক্ষের শূল স্বরূপ হইয়া বহু যন্ত্রণা সহ্য করেন। তাঁহাকে ঐ ব্যবসায় হইতে নিবৃত্ত করিবার নিমিত্ত তাঁহার গুরু জনেরা দিবা নিশি উত্তেজনা করিতে থাকেন; এবং প্রতিবাসিনী কামিনীগণ তাঁহাদিগকে লক্ষ্য করিয়া কত প্রকারই বিদ্রুপ করেন, ও স্ব স্ব কুমারীকে তাহাদিগের সহিত বাক্যালাপ করণে নিষেধ করেন। এই নিমিত্ত কেহ সহসা বিদ্যাভ্যাসে প্রবৃত্ত হইতে পারেন না। এরূপ প্রতিবন্ধ-