পাতা:হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা - কৈলাসবাসিনী দেবী.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা।
৭১

থাকে, ইহারা গৃহের অতি সামান্য কার্য্যে নিয়োজিত হইয়া, দিবসে একাহার গ্রহণ করত অতি দীনভাবে দিনযাপন করে। হায়! কোন সময়ে আবার দিবসান্তে একাহার গ্রহণ ও একচীর বস্ত্র ধারণের নিমিত্ত কোন কোন অভাগিনীকে লালায়িত হইতে হয়। হায়! হিন্দু মহিলাগণের বৈধব্য যন্ত্রণা স্মরণ করিলে কাহার হৃদয়ে না দয়ার সঞ্চার হয়। আহা! যখন নিদাঘকালে বিষম একাদশী দিবসে ইহাঁরা দুঃসহ পিপাসায় আকুল হইয়া চাতকীর ন্যায় চঞ্চল হয়েন, তখন ইহাঁদিগকে দর্শন করিলে অতি কঠোর হৃদয় ব্যক্তিরও দয়ার সঞ্চার হয়। হা হিন্দুধর্ম্ম! তোমাকেই ধন্যবাদ, আর তোমাকে যে মহাত্মা সৃষ্টি করিয়াছেন তাঁহাকেও ধন্যবাদ। আহা! এই ধর্ম্মের যে কীদৃশ ফল তাহা তাঁহারাই জানেন। হায়! যাঁহারা কহিয়াছেন যে, ‘‘দয়া বিহীন মনুষ্য কখনই মনুষ্য নামে বিখ্যাত হইতে পারে না। যাহার শরীরে দয়া নাই সে নরাকার পশু তুল্য”। কিন্তু তাঁহারা লোকদিগকে যে বাক্য দ্বারা উপদেশ দিয়াছিলেন, আপনারাই আবার তদ্বিপরীত আচরণে কেন প্রবৃত্ত হইলেন। বিধবাদিগের ব্রহ্মচর্য্যাবলম্বন এবং একাদশী তিথিতে জল গ্রহণে মহাপাপাদি যে সমস্ত কঠোর নিয়ম প্রচলিত করিয়া গিয়াছেন, সে সমুদয় কি বিধবাদিগের প্রতি সদয় হইয়া করিয়াছেন? হায়! দুঃখের কথা কি কহিব, যদি কোন অভাগিনী একাদশী দিবসে ঘোর বিকারাক্রান্ত হইয়া মহা নিদ্রা প্রাপ্ত হয়; তথাপি সেই সময়ে তাহার আত্মীয়গণ তাহার পারলৌকিক হিত সাধনের নিমিত্ত তাহার বদনে পবিত্রবারি প্রদানে অসমর্থ হইয়া ঐ বারি তাহার কর্ণ কুহরে প্রদান করেন। আহা!