পাতা:হেক্‌টর বধ - মাইকেল মধুসূদন দত্ত.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৮
হেক্‌টর বধ।

চিররণবিরত করিতে পারে নাই।” অকুতোভয় দ্যোমিদ্‌ উত্তর করিলেন, “রে ধন্বী, রে গ্লানিকারক, রে অলকালঙ্কৃত অঙ্গনাকুলপ্রিয় দুর্ম্মতি! তোর অস্ত্রাঘাতে আমার কি হইতে পারে? তোর অস্ত্র নিক্ষেপণ অবলা রমণী ও শিশুর ন্যায়। তোর যদি রণস্পৃহা থাকে, তবে সম্মুখ রণে বিমুখ হইস্‌ কেন?” বিখ্যাত শূলী সখা আদিস্যুস্‌ পরম যত্নে তীর ক্ষতস্থল হইতে টানিয়া বাহির করিলে দ্যোমিদ্‌ বিষম যাতনায় অস্থির হইয়া রণস্থল হইতে শিবিরাভিমুখে রথারোহণে চলিলেন। শূলকুশল আদিস্যুস্‌ একাকী রণক্ষেত্রে রহিলেন, প্রাণ অপেক্ষা মান প্রিয়তর বিবেচনায় প্রাণপণে যুঝিতে লাগিলেন। যেমন গুল্মাবৃত বরাহকে আক্রমণার্থে কিরাতবৃন্দ শুনকবৃন্দ সহকারে গুল্মের চতুষ্পার্শ্বে একত্রীভূত হইয়া অবস্থিতি করে, আর যখন সে রক্তদন্ত কৃতান্তদূত বাহির হয়, তখন সকলে সভয়ে কেবল দূর হইতে অস্ত্র নিক্ষেপ করিতে থাকে, ট্রয়স্থ যোধের গ্রীক্‌যোধবরকে সেইরূপে আক্রমণ করিল।

 সুকস নামক এক মহা বীরপুরুষ সরোষে আদিস্যুসের দৃঢ় ফলকে শূল নিক্ষেপ করিলেন। অস্ত্র দুর্ভেদ্য ফলক ভেদ করিয়া কবচ ছিন্ন ভিন্ন করতঃ চর্ম্ম পর্য্যন্ত ভেদ করিল। কিন্তু সুনীলকমলাক্ষী দেবী আথেনী এ প্রাণসংশয় অস্ত্র বীরেশ্বরের শরীরাভ্যন্তরে প্রবেশ করিতে দিলেন না। যশস্বী আদিস্যুস্‌ বিষমাঘাতে প্রহারকের প্রাণ সংহার করিলেন। পরে স্বহস্তে শূল টানিয়া বাহির করিলেন। লোহরঞ্জনে বীরদেহ যেন রঞ্জিত হইয়া উঠিল। বীরবরের এই অবস্থা দেখিয়া ট্রয়স্থ