পাতা:হেক্‌টর বধ - মাইকেল মধুসূদন দত্ত.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
হেক্‌টর বধ।

পরিত্যাগ করিল? অতএব তুমি, সখি, অতি দ্রুতগতিতে বর্ম্মধারী যোধদলের মধ্যে অবির্ভূতা হইয়া সুমধুর ও প্ররোচক বচনে তাহাদিগকে সাগরযানসমূহ সাগরমুখে ভাসাইতে নিবারণ কর।

 দেবীর বচনানুসারে আথেনী অলিম্পুসনামক দেবগিরি হইতে গ্রীক্‌সৈন্যের শিবির মধ্যে বিদ্যুৎগতিতে আবির্ভূতা হইলেন; এবং দেখিলেন, যে সুকৌশলী অদিস্যুস্‌ ক্ষুণ্ণচিত্তে ও মলিনবদনে স্বপোত-সন্নিধানে দাঁড়াইয়া রহিয়াছেন। দেবী তাহাকে স্পর্শ করিয়া কহিলেন, বৎস! ও যোধদল কি লজ্জায় জলাঞ্জলি দিয়া স্বদেশে ফিরিয়া চলিল। তোমরা কি কেবল জগন্মণ্ডলে হাস্যাস্পদ হইবার নিমিত্ত এদেশে আসিয়াছিলে। সে যাহা হউক, তুমি সর্ব্বাপেক্ষা বিজ্ঞতম। অতএব তুমি অতি ত্বরায় এই স্বদেশগমনাকাঙ্ক্ষিণী অক্ষৌহিণীর মনঃস্রোতঃ পুনরায় রণসাগরাভিমুখে বহাইতে সচেষ্ট হও। অদিস্যুস্‌ স্বরবৈলক্ষণ্যে জানিতে পারিলেন, যে এ দেববাক্য! এবং দেবীর প্রসাদে দিব্য চক্ষুঃ লাভ করিয়া দেবমূর্ত্তি সম্মুখে উপস্থিতা দেখিলেন। তদ্দর্শনে প্রফুল্লচিত্ত হইয়া রাজচক্রবর্ত্তী আগেমেম্‌ননের রাজদণ্ড রাজানুমতিরূপে চাহিয়া লইয়া অনেককে অনেকানেক প্রবোধবাক্যে শান্ত্বনা করিতে লাগিলেন।

 লণ্ডভণ্ড এবং কোলাহলপূর্ণ সৈন্যদলকে শান্তশীল ও শ্রবণোৎসুক দেখিয়া অদিস্যুস্‌ উচ্চৈঃস্বরে কহিয়া উঠিলেন, হে বীরবৃন্দ! তোমরা কি পুর্ব্বকথা সকল বিস্মৃত হইয়া কলঙ্কসাগরে নিমগ্ন হইতে ইচ্ছা করিতেছ? স্মরণ করিয়া দেখ, যখন আমরা এই ট্রয়নগরাভিমুখে যাত্রা