পাতা:হেক্‌টর বধ - মাইকেল মধুসূদন দত্ত.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হেক্‌টর বধ।
৪১

এমত সময়ে রাজ্ঞী হেলেনী তৎসন্নিধানে দেবদত্ত আসনে আসীন হইয়া মুখ ফিরাইয়া এই বলিয়া তিরস্কার করিতে লাগিলেন, হে বীর কুলকলঙ্ক! তুমি কেন যুদ্ধস্থল হইতে ফিরিয়া আসিয়াছ? আমার রণপ্রিয় পূর্ব্বপতি মহেষ্বাস মানিল্যুসের হস্তে তোমার মৃত্যু হইলে ভাল হইত। যখন প্রথমে আমাদের এই কুলক্ষণা প্রীতির সঞ্চার হয়, তখন তুমি যে সব আত্মশ্লাঘা করিতে, এখন তোমার সে সব আত্মশ্লাঘা কোথায় গেল? এখন তুমি কি সে সব অহঙ্কারগর্ভ অঙ্গীকার এই রূপে সুসঙ্গত করিতেছ? মহেষ্বাস মানিল্যুসের সহিত তোমার উপমা উপমেয় ভাব কখনই সম্ভব হইতে পারে না।

 সুন্দর বীর স্কন্দর প্রাণপ্রিয়াকে এইরূপ রোষপরবশ দেখিয়া সুমধুর ও প্রবোধ-বচনে কহিলেন, বিনোদিনি! তোমার সুধাকর স্বরূপ বদন হইতে কি এ রূপ বিষরূপ গ্লানির উৎপত্তি হওয়া উচিত? দুষ্ট মানিল্যুস এ যাত্রায় বাঁচিল বটে; কিন্তু যাত্রান্তরে কোন না কোন কালে আমার হস্তে যে তাহার মৃত্যু হইবে, তাহার আর কোনই সন্দেহ নাই। এই কহিয়া, বীরবর সোহগে ও সাদরে কৃশোদরীর কোমল করকমল নিজ করকমল দ্বারা গ্রহণ করিলেন।

 সমরান্তে দুরন্ত মানিল্যুস বিনষ্টাশন ক্ষুৎক্ষামকণ্ঠ বন পশুর ন্যায় রণস্থলে ইতস্ততঃ পরিভ্রমণ করতঃ সকলকেই জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন, হে বীরব্রজ! তোমরা কি জান, যে দুষ্টমতি কাপুরুষ স্কন্দর কোন্‌ স্থানে লুক্কায়িত আছে? কিন্তু কেহই সেই রণস্থল পরিত্যাগীর কোন বার্ত্তাই দিতে পারিল না। পরে রাজচক্রবর্ত্তী