পাতা:হেক্‌টর বধ - মাইকেল মধুসূদন দত্ত.pdf/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৮
হেক্‌টর বধ।

পথে একটি বক পক্ষী উড়াইলেন। সুতরাং ঘোর তিমির যোগে বীরযুগল সেই শুভ শকুন দেখিতে পাইলেন না। তথাচ পক্ষ পরিচালনার শব্দে দেবীদত্ত সুলক্ষণ তাহাদিগের বোধগম্য হইল। মহাদেবীর বিবিধ স্তুতি করণান্তে সিংহদ্বয় সে ঘোর অন্ধকারময় রজনীযোগে শবরাশি, ভগ্নঅস্ত্রস্তূপ ও কৃষ্ণবর্ণ শোণিতস্রোতের মধ্য দিয়া নির্ভয় হৃদয়ে রিপুদলাভিমুখে নীরবে চলিলেন।

 কতক্ষণ পরে দেবাকৃতি আদিস্যুস কিঞ্চিৎ অগ্রসর হইয়া সহচরকে অতি মৃদুস্বরে কহিলেন, সখে দ্যোমিদ্‌! বোধ হয়, যেন কোন একজন অরিপক্ষের শিবির দেশ হইতে এ দিকে আসিতেছে। আমি এক আগন্তুক জনের পদধ্বনি শুনিতে পাইতেছি। কিন্তু এ কি কোন গুপ্তচর, না তস্কর মৃতদেহ হইতে বস্ত্রাদি চুরি করণাভিলাষে আসিতেছে, এ নির্ণয় করা দুষ্কর। আইস! আমরা উহাকে আমাদিগের শিবিরাভিমুখে যাইতে দি। পরে পশ্চাদ্ভাগ হইতে উহার পলায়নের পথরুদ্ধ অতি সহজ হইবে। এই কহিয়া বীরদ্বয় মৃতদেহ পুঞ্জমধ্যে ভূতলশায়ী হইলেন। অভাগা আগন্তুক জন অকুতোভয়ে ও দ্রুতগমনে গ্রীক্‌ শিবিরাভিমুখে চলিতে লাগিল। অকস্মাৎ বীরদ্বয় গাত্রোত্থান করিয়া তাহার পশ্চাতে ধাবমান হইলেন। যেমন তীক্ষ্ণদণ্ড শুনকদ্বয় বনপথে আর্ত্তনিনাদী কুরঙ্গ কি শশকের পশ্চাতে ধাবমান হয়, বীরদ্বয় সেইরূপ পলায়নোন্মুখ চরের অভিমুখে ঊর্দ্ধশ্বাসে প্রাণপণে দৌড়িলেন। মহাতঙ্কে অভাগা সহসা গতিহীন হইল। এবং অকাতরে কহিল। “হে বীরদ্বয়! তোমরা