পাতা:হে অরণ্য কথা কও - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

62 7267 कथा क७ শনিবার রাত্রে যেখানে লেফটেনাণ্ট জহুরী ও বোসের অতিথি হয়ে রাত কাটিয়েছিলাম। গালুডির বিষ্ণু প্ৰধান যাচ্চে। এ গাড়ীতে, সে নমস্কার করে বল্পে, কোথায় নামবেন ? আমি বল্লাম, ঘাটশিলায়। রেডিও বক্তৃতা দিয়ে বারাকপুর গিয়েছিলাম একদিনের জন্যে। শিউলি ফুল ফটচে দেখে এসেচি। বেশ লাগলো একটা দিন। তবে ম্যালেরিয়াতে সবাই ভুগচে। ফণি রায় ও আমি এক সঙ্গে বেলা দুটোর গাড়ীতে চলে এলুম। ঘাটশিলা যেদিন এলুম, সেদিন সুরেশ বাবুও এলেন আমার সঙ্গে । ক’দিন খুব জ্যোৎস্না। আজ চতুৰ্দশী, কাল কোজাগরী পূর্ণিমা। রাত ৮টা পৰ্য্যন্ত দ্বিজেন মল্লিকের বাড়ী বসে গল্প করলুম।--তারপর মনে হোল আজ জ্যোৎস্নাটি মাটি করবো ? কোথাও যাবো না ? অতি রাত্রে সেই অপূর্ব জ্যোৎস্না রাতে হন হন করে হেঁটে চলে গেলুম ফলডুংরি । রাত ন’টা । বেশি রাত্রির জ্যোৎস্না। আমার সেই প্ৰিয় স্থানটিতে পাথরের ওপর গিয়ে যোগাসনে বসলুম। দুরে বুরুডি ও বাসাডের পাহাড় ও বনানীর মাথায় একটি নৃক্ষত্র অনন্তের হৃদস্পন্দনের মত টিপ । টিপ করে জলচে। জ্যোৎস্নান্নাত বনভূমি ও ফলডুংরি পাহাড়ের সে রূপে মন মুগ্ধ, স্তব্ধ ও বিস্মিত হয়ে উঠেচে। মুখে কথা বলতে পারি নে -এমন একটি অবশ, আড়ষ্ট ভাব। ভগবানের উপাসনা এখানে নীরব ও ভাবঘন, সমাহিত। বিশাল প্ৰান্তরের যেদিকে চাই-জ্যোৎস্নালোকিত ধরিত্রী যেন জন্মমরণ-ভীতি-ভ্ৰংশি কোন মহাদেবতার সঙ্গে ঘনিষ্ট মিলনের আনন্দে নিম্পন্দ সমাধিতে অন্তমুখী । শুধু দেখা যায় বসে বসে এর অপূর্ব রূপ, শুধু অনুভব করা যায় মনের গোপন অন্তরে এর সে নীরব বাণী । চারিদিকে নিঃশব্দ, একে তো নির্জন প্ৰান্তৱ-এত রাত্রে 8)