বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়। করের অঙ্গুলি মধ্যে রতন অঙ্গুরী। হৃদয়ে পরিল সবে লক্ষের (১) কচুলি। কর্ণে কনকপাত পরিল সুন্দর। সাতলরী হার পরে অতি মনোহর। রজত কাঞ্চন গজ-মুকুতা প্রবাল। গাথিয়া পরিল হার দিব্য রত্ন-মাল॥ নাসিকাতে নাকস্বান বিচিত্র গঠন। শ্রবণে পরিল সভে স্বর্ণের ভূষণ৷ নয়ন খঞ্জন যুগে পরিল কজল। ললাটে সিন্দুর তার করিছে উজ্জ্বল ৷ সিন্দূরের চারিদিকে চন্দন শোভয়। সুধাকর-মধ্যে যেন অরুণ উদয় ৷ কাঞ্চন নির্ম্মিত শিরে মুকুট পরিল। লক্ষের জাদ (২) দিয়া কুন্তল বান্ধিল ৷ নিতম্বে দোলয়ে বেণী দেখিয়ে সুন্দর। বিচিত্র সুতলী দিল মস্তক উপর॥ করিল অঙ্গের বেশ সব ব্রজ-রাম। ত্রিজগতে দিতে নাহি তাহার উপমা। কৃষ্ণে ভেটিবারে চলে রাধা ঠাকুরাণী। নন্দ-যশোদার কিছু শুনহ কাহিনী॥ জীবন চক্রবত্তীর ভাগবত। বাং ১১০৩ সনের (১৭৯৫ খৃঃ) পুথি হইতে উদ্ধত হইল। যমুনার তরঙ্গ-দৰ্শনে গোপীগণের উৎকণ্ঠা। গোপীরে করিতে পার চলে কৃষ্ণ কর্ণধার নায়্যা হৈয়া রহিলা আপনি। জানিঞা প্রভুর ছল যমুনা অগাধ জল অতি বেগে চলে তরঙ্গিণী॥ (১) কাচুলী শব্দের পূর্ব্বে “লক্ষ” শব্দ প্রায়ই প্রাচীন কাব্যে পাওয়া যায়। “লক্ষ” অর্থ “লক্ষ টাকা মূল্যের” বলিয়া মনে হয়। (২) লক্ষ টাকা মূল্যের ণময় মণিখচিত ফিতা।
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/১০৪০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।