তরী পুরাতন দেখি নদীর তরঙ্গ সখি
আজি মোর না দেখি নিস্তার।
রক্ষার কারণ তায় আপনি রসিক রায়
তুমি হইয়াছ কর্ণধার।
শুনহ রসিকমণি পার না করহ কেনি
বধভাগী হইবে আপনি।
মহীতলে নখে লেখি পুনঃ কহে শশিমুখী
কৃপা কর মোরে চক্রপাণি॥
ওহে কর্ণধার শুন ঘুষিব তোমার গুণ
আমরা বাঁচিব যত দিন।
লোকে যশ নাই যার বিফল জনম তার
সেই জন বড় কর্ম্মহীন॥
শুনিঞা বিনয় বাণী হাসিয়া নাবিকমণি
বলিতে লাগিল পুনর্ব্বার।
পথে করে যদি ঠেক বেলা নাই অতিরেক
তেকারণে নাঞি করি পার॥
শুনিঞা তোমার কথা মরমে লাগয়ে ব্যথা
নারী-নিন্দা না করিহ আর।
এই যত ঘর দ্বার নারী বিনে অন্ধকার
নারী লইয়া সকল সংসার॥
এ রূপ যৌবন যার কোন্ অনুতাপ তার
নিরূপমা ভুবনমোহিনী।
আমার পুণ্যের ফলে দধি বেচিবার ছলে
দেখা দিবে আসিয়া আপনি॥
শত শত একবারে তরী আরোহণ করে
দেখিয়াছি মোরা কত বার।
সকল জানহ তুমি বিপরীত কর কেনি
তবে কেনে নাঞি সহে ভার॥
মন দিয়া কর পার আর দিব মণিহার
আর দিব অমূল্য রতন।
এত বলি নায়্যা বলে তরী ঠেকাইল জলে
চক্রবর্ত্তী রচিল জীবন॥
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/১০৪৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯১৬
বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়।