আমি যে তোমার ব্রাহ্মণী। ব্রাহ্মণ বলিল যদ্যপি তুই আমার ব্রাহ্মণী তবে কিরূপে এরূপ বিভব প্রাপ্ত হইয়াছিস এবং নানারূপ মণি মাণিক্য রজত কাঞ্চন বসন ভূষণ অপূর্ব্ব ভবন কার দ্বারায় সঞ্চয় করিয়াছিস, অনুমান করি কএক দিবস বাটীতে না থাকাতে আমাকে তুচ্ছ বোধ করিয়া * * * * * । ব্রাহ্মণী কহিল হে স্বামিন্ আপনি শিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তি হইআ নষ্ট লোকের ন্যায় দুষ্ট কথা কহিবেন না, আমি পতিব্রতা পতিভক্তা পতি-প্রেমাসক্তা। নিজ ভর্ত্তা ভিন্ন অন্য পুরুষ পরেশ হইলেও দর্শন বা স্পর্শন করি না। তবে যেরূপে এরূপ বিষয় প্রাপ্ত হইয়াছি তাহা কহি শ্রবণ কর—গত রাত্রে পূর্ব্ব পত্র-কুটীর-মধ্যে শয়নে থাকিয়া সুস্বপ্ন সন্দর্শন করিয়াছি—যেন জনৈক ভুবনমোহিনী গৌরাঙ্গী কমলাসনা কমল-বদনা কমল-নয়না আমার শিয়রে বসিয়া বলিতে লাগিলেন—ওগো ব্রাহ্মণী তোমার ব্রাহ্মণের গুণে আমি কমলা বাধিত হওত অচলা হইয়া তোমার গৃহে চিরবাস করিলাম, এই স্বপ্নভঙ্গে আশ্চর্য্য ঐশ্বর্য্য দেখিয়া চমৎকার জ্ঞান করিয়াছি। ব্রাহ্মণী এই কথা কহিবাতে ব্রাহ্মণের কোন মতে বিশ্বাস হইল না। পরে দৈববাণী শ্রবণে বিপ্র বিশ্বাস মানিয়া স্বনারীর কর গ্রহণান্তর স্বর্ণময় পুরীতে প্রবেশ করত পরম সুখে কাল যাপন করিতে লাগিলেন॥
রুক্মিণী আদ্য শক্তি দেবীকে পূজা করিয়া চৌত্রিশ অক্ষরে স্তব করেন।
এখানেতে রুক্মিণীর শুন বিবরণ।
কৃষ্ণ-আগমন শুনে প্রফুল্লিত মন॥
বসন ভূষণ পরে হয়ে আনন্দিতা।
সুস্থির হইলা মনে ভীষ্মক-দুহিতা॥
অপরেতে রাজরাণী কহে নারীগণে।
রুক্মিণীরে লয়ে যাও দেবী-দরশনে॥
কুলের দেবতা কালী আইস পূজা কোরে।
এত শুনি নারীগণ চলিল সত্বরে॥
দেবীর আলয়ে গিয়া রুক্মিণী তখন।
পূজিয়া পার্ব্বতী-পদ করয়ে স্তবন॥
জয় জয় জয়কালী কালান্ত-রূপিণী।
কালাচাঁদে পতি দে মা কাল-সীমন্তিনী॥