রুক্মীর বন্ধন দেখে বলেন বলাই।
বলি তাই একি ভাই করেছ কানাই॥
সম্বন্ধে গৌরব রুক্মী শ্যালক তোমার।
বন্ধন-মোচন শীঘ্র করহ উহার॥
এত বলি বলদেব বন্ধন এলায়।
মৃত্যুকল্প হয়ে দুঃখে রুক্মী গৃহে যায়॥
রাধাকৃষ্ণ-পাদপদ্ম হৃদে করি আশ।
রাধাকৃষ্ণ দাসে ভাষে দ্বারক-বিলাস॥
দ্বারিকাবাসিনী নারীগণ রুক্মিণীরে নিরীক্ষণপূর্ব্বক রূপবর্ণন করেন।
কমলারে সঙ্গে লয়ে কমললোচন।
উদয় হইল আসি দ্বারকা-ভূবন॥
রুক্মিণীরে হেরে যত পুরবাসি-নারী।
বলে দিদি এ রূপের তুল্য দিতে নারি॥
বর্ণিতে ইহার বর্ণ হারি মানে বর্ণ।
এ বর্ণ নিকটে মরি কি ছার সুবর্ণ॥
স্বর্ণ বুঝি কেমনে এ বর্ণ দেখেছিল।
তেঁই সে বিরাগে দীপ্ত অনলে দহিল॥
মুখচন্দ্র যেন পূর্ণচন্দ্র-বিনিন্দিত।
তাহে আখিপদ্ম নীলপদ্ম প্রকাশিত॥
কুসুম-কোদণ্ড যেন দ্বিখণ্ড করিয়া।
তুরু-মাঝে মদন রেখেছ প্রকাশিয়া॥
গৃধিনীর গর্ব্ব খর্ব্ব দেখে শ্রুতি-মূল।
নাসায় মিশায় খগ আর তিল-ফুল॥
সীঁথিতে সিন্দুর-বিন্দু কি শোভা করেছে।
প্রভাতের ভানু যেন উদয় হয়েছে॥
এ নারীর ওষ্ঠাধর না হেরেছে যেই।
তুচ্ছ পক্ক বিম্বকে প্রশংসা করে সেই॥
সাগরে মুক্তার স্থিতি শুনিগো শ্রবণে।
এবে কি করেছে বাস ইহার দশনে॥
হেরে বুঝি কুচপদ্ম পদ্ম লাজভরে।
মনদুঃখে সদা থাকে সলিল-ভিতরে॥