পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়।

করিবার যথেষ্ট কারণ এখনও পাই নাই। ডাকের বচনের অনেকাংশ অত্যন্ত দুর্ব্বোধ, যথাঃ–

"আদি অন্ত ভুঝসি।
ইষ্ট দেবতা যেহ পূজসি॥
মরণের যদি ডর বাসসি।
অসম্ভব কভু না খায়সি॥"
"বুন্দা বুঝিয়া এড়িব লুণ্ড।
আগল হৈলে নিবারিব তুণ্ড॥” ইত্যাদি।

 ডাক ও খনার বচন শুধু বঙ্গদেশে নহে, এখনও উড়িষ্যায়ও প্রচলিত আছে। বহু-প্রচলন-হেতু ইহাদের ভাষা পরবর্ত্তী কালে যে অনেকটা পরিবর্ত্তিত হইয়াছে, তাহা অস্বীকার করিবার উপায় নাই; তবে আদিম রচনার চিহ্ন এখনও অনেক স্থলে বিদ্যমান আছে।

সন্তান-জন্মের পর।জন্মমাত্র বলে ডাক।

পো এড়িয়া পোআতি রাখ॥[১]
ধুইআ পৌচ্ছআ দিহ কোলে।
যবে ফুল নাম্বিবেক ভালে॥
নাড়ি ছেদিআ দিহ জয়।
ডাক বলে এই হয়॥

অথ ধর্ম্ম-প্রকরণ।


ধর্ম্ম করিতে যে জন জানি।
পুখর দিআ রাখিও পানি॥
অশ্বখ রোপে বড় কর্ম্ম।
মণ্ডপ দেএ অশেষ ধর্ম্ম॥
অন্ন বিন্ন[২] নাহি দান।
ইহার পর ধর্ম্ম নাহি আন॥

অথ রন্ধন-প্রকরণ।


নিমপাতা কাসন্দির ঝোল।
তেলের ওপর দিয়া তোল॥

পলতা শাক রুহি মাছ।

বলে ডাক বেঞ্জন সাছ[৩]
মদ্‌গুর মৎস্য দাএ কুটিয়া।
হিঙ্গ আদা লবণ দিয়া॥
তেল হলদি তাহাতে দিব।
বলে ডাক বেঞ্জন খাব॥
পোনা মাছ জামিরের রসে।
কাসন্দি দিআ যে জন পরশে॥
তাহা খাইলে অরুচ্য পালাএ।
আছুক মানবের কথা
দেবের লোভ যাএ॥
ইচিলা[৪] মাছ তৈলে ভাজিয়া।
পাতি লেবু তাতে দিয়া॥
যাহাতে দেই তাতে মেলে।
হিঙ্গ মরিচ দিহ ঝোলে॥
চালু দিহ যত তত।
পানী দিহ তিন যত॥[৫]

  1. সন্তানকে ত্যাগ করিয়া প্রসূতির প্রতি মনোযোগী হও।
  2. বিনা।
  3. সাছ=সাঁচা=সত্য।
  4. চিংড়ী।
  5. চাউল যত দিবে তাহার তিন গুণ জল দেওয়া উচিত।