পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়।

লগ্ন-নির্ণয়।

কি শ্বশুর মনে গণ।
লগ্ন-মান কর দুনো॥
দণ্ডে পল পলে বিপল।
চাইয়া দেখ লগ্ন সকল॥

পীড়ার পরিণাম-বিচার।

আসিয়া দূত দাঁড়ায় কোণে।
কথা কহে ঊর্দ্ধ নয়নে॥
শিরে পৃষ্ঠে বুকে হাত।
সেই দূতে পুছে বাত॥
কুটা ছিঁড়ে করে খাই।
খনা বলে ফুরাল আই॥[১]

অশুভ বার্ত্তা যে জন ভণে।
তাঁহার মুখে যে জন শুনে॥
তিথি বার করে এক।
সাতে হরে পরমায়ু দেখ॥
এক তিন থাকে বাণ।
যম-ঘর হৈতে টেনে আন॥
দুই চারি থাকে ছয়।
অবশ্য তার মৃত্যু হয়॥

চন্দ্রগ্রহণ।

যে যে মাসের যে যে রাশি।
তার সপ্তমে থাকে শশী॥
সেই দিন যদি হয় পৌর্ণ-মাসী।
অবশ্য রাহু গ্রাসে শশী॥

যাত্রা।

দ্বাদশ আঙ্গুল করি কাঠি।
সূর্য্য-মণ্ডলে দিয়া দিঠি॥
রবির চৌদ্দ সোমের ষোল।
পঞ্চদশ মঙ্গলের ভাল॥
বুধ সতের গুরু আঠার।
শুক্র শনি বারো বারো॥
এ যাত্রায় যে জন যায়।
সংবৎসরের ফল এক দিনে পায়॥[২]
হাঁচি জেঠি পড়ে যার।
শত গুণে লভ্য হয় তার॥[৩]

উত্তরে হস্তা দক্ষিণে শ্রবণা।
পূর্ব্বে অশ্বিনী না কর গমনা॥
পশ্চিমে যাইতে রোহিণী রোষে।[৪]
হরি হর ব্রহ্মা বাহুড়ে না আইসে॥[৫]

  1. যদি সংবাদদাতা হস্তে কুটা ছিঁড়িয়া তাহা চর্ব্বণ করিতে করিতে প্রশ্ন করে, তবে রোগীর আয়ু ফুরাইয়াছে বুঝিতে হইবে।
  2. বার অঙ্গুলী পরিমাণ কঞ্চী বা সরু বাখাড়ী রৌদ্রের সময় দাঁড় করিয়া ধরিলে তাহার ছায়ার পরিমাণ যত অঙ্গুলী হইবে, তদনুসারে শুভযাত্রা বিচার্য্য। ঐ ছায়ার পরিমাণ যখন রবিবারে চৌদ্দ অঙ্গুলী, সোমবারে ষোল অঙ্গুলী, মঙ্গলবারে পনেরো অঙ্গুলী ইত্যাদি হইবে, তখন যাত্রা শুভ বলিয়া জানিবে।
  3. যাত্রাকালে সাধারণতঃ হাঁচিতে বা টিক্‌টিকীর শব্দে যাত্রা অসিদ্ধ হয়; কিন্তু পূর্ব্বোক্তরূপে শুভ-যাত্রা স্থিরীকৃত হইলে ঐ সমস্ত অশুভ লক্ষণ বিশেষ লাভজনক হইয়া দাঁড়ায়।
  4. রোহিণী নক্ষত্রে পশ্চিমে যাত্রা নিষিদ্ধ।
  5. বাহুড়ে=ফিরিয়া। হরি, হর বা ব্রহ্মার ন্যায় প্রতাপশালী হইলেও ফিরিয়া আসে না, অর্থাৎ মৃত্যু নিশ্চিত।