পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়।

কৃষি-তত্ত্ব।

খনা ডেকে বলে যান।
রোদে ধান ছায়ায় পাণ॥[১]

দাতার নারিকেল বখিলের বাঁশ।
কমে না বাড়ে না বার মাস॥[২]

দিনে রোদ রাতে জল।
তাতে বাড়ে ধানের বল॥
কাতিকের ঊন জলে।
খনা বলে দুন ফলে॥[৩]

শুন বাপু চাষার বেটা।
বাঁশের ঝাড়ে দিও ধানের চিটা[৪]
চিটা দিলে বাঁশের গোড়ে।
দুই কুড়া[৫] ভূঁই বেড়বে ঝাড়ে॥

শুনরে বাপু চাষার বেটা।
মাটীর মধ্যে বেলে যেটা॥
তাতে যদি বুনিস পটল।
তাতেই তোর আশার সফল॥

খনা বলে শুন শুন।
শরতের শেষে মূলা বুন॥

যদি না হয় অগ্রাণে বৃষ্টি।
তবে না হয় কাঁঠালের সৃষ্টি॥

আগে বেঁধে দিবে আলি।
তাতে রুইয়ে দিবে শালি॥[৬]
তাতে যদি না হয় শালি।
খনা বলে পাড় গালি॥

বৃষ্টি-ফল।

যদি বরে[৭] আগনে।
রাজা যান মাগনে॥
যদি বরে পৌষে।
কড়ি হয় তুষে॥
যদি বরে মাঘের শেষ।
ধন্য রাজা পুণ্য দেশ॥
যদি বরে ফাগুনে।
চিনা কাউন দ্বিগুণে॥

  1. রৌদ্রে ধান এবং ছায়ায় পাণ বেশী হয়।
  2. দাতার নারিকেল কমে না, অর্থাৎ একটি নারিকেল পাড়িলে তৎস্থলে আর একটি হয়। বখিলের (কৃপণের) বাঁশ বাড়ে না; কারণ, বাঁশ যতই কাটা যায় ততই বৃদ্ধি পায়।
  3. কার্ত্তিক মাসে অল্প বৃষ্টি হইলে দ্বিগুণ ফসল হয়।
  4. চাউলহীন ধান।
  5. কাঠা বা কাণী।
  6. পূর্ব্বে আইল বাঁধিয়া তৎপরে শালিধান্য রোপণ করিলে ভাল হয়।
  7. বরে—বর্ষে=বর্ষণ করে।