বৌদ্ধযুগ—মাণিকচন্দ্র রাজার গান—খ্রঃ ১১শ-১২শ শতাব্দী। ২৯ ঘিনে বান্দী নাহি পিন্দে পাটের পাছড়। (১) কারো মাড়াল কেহ না যায়। কারো পুষ্করিণীর জল কেহ না খায়। (২) ভাটি (৩) হইতে আইল বাঙ্গাল লম্বা লম্বা দাড়ি। সেই বাঙ্গাল আসিয়া মুলুকৎ কৈল্প কড়ি॥ আছিল দেড় বুড়ি খাজনা লৈল পোনার গণ্ড। নাঙ্গল বেচায় জোঙ্গাল (৪) বেচায় আরো বেচায় ফাল। খাজনার তাপতে (৫) বেচায় দুধের ছাওয়াল। রাড়ী কাঙ্গাল দুঃখীর বড় দুস্থ হইল। থানে খানে তালুক সব ছন (৬) হইয়া গেল। ছোট রায়ত উঠে বলে বড় রায়ত ভাই। প্রধানর বরাবর সবে চল যাই॥ কি আজ্ঞা বলে প্রধান সকল। যেত (৭) রায়ত পরামর্শ করিয়া প্রধানর বাড়ী বৈলে চৈলে গেল। কেমন বুদ্ধি করি ভাই কেমন সমাচার। অসতি (৮) রাজা হৈল রাজ্যের ভিতর॥ প্রধান বলে রায়ত সকল এবুদ্ধি নাই আমার বরাবর (৯)॥ চল যাই শিবের বরাবর কি আজ্ঞা বলে ভুল মহেশ্বর। যেত রায়ত পরামর্শ করিয়া গেল শিবের বরাবর॥ শিব ঠাকুর বৈলে তোলে ছাড়ে রাও (১০)। ঘরে ছিল শিব ঠাকুর বাহিরে দিলে পাও ৷ (১) ঘৃণায় বান্দীগণও পাটের পাছড়া পরে না, তাহারা তসর পরে। পাছড়া= থেশ; পার্ব্বত্য রমণীগণের পরিধান-বস্ত্রকে ‘পাছড়া’ বলে। আগড়তলা রাজ্যের বাঙ্গালীদের মধ্যেও ঐ পাছড়া বিছানার চাদর ও শীত-বস্ত্র রূপে ব্যবহৃত হয়। (২) প্রত্যেকের বাড়ীর স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র পথ ও প্রত্যেকের বাড়ীর স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র পুকুর। (৩) দক্ষিণ। (৪) জোঙ্গাল= জোয়াল। (৫) তাপতে = পীড়নে। (৬) ছন=ছন-পরিপূর্ণ=জঙ্গলময়। (৭) ষেত =ষত = যাবতীয়। (৮) অসতি = অসংপ্রকৃতি। (৯) আমার নিকট। (১০) রব। বাঙ্গাল মন্ত্রীর অত্যাচার। প্রজাগণের পরামর্শ। শিব ঠাকুরের নিকট দুঃখ-নিবেদন।
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/১৫১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।