8○ বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়। আজি কালি করিয়া নও বৎসর হইল। তখনি ময়নামতী কোন কাম করিল। গুরু ব্রাহ্মণের সহিক্ষাত কথা বলিবার লাগিল ৷ যা যা গুরু ব্রাহ্মণ বাক্য আমার লও। হরিচন্দ্র (১) রাজার কাছে শীঘ্র করিয়া যাও ৷ তার ঘরে আছে অৰ্জুন পতুন কল্প দুই জন। তার আছে কন্যা দুইজন মহলের ভিতর। ঐ কন্যা যোড়িয়া আইস কহিলাম তোমায়। ঐ কথা শুনিয়া ব্রাহ্মণ ঠাকুর না থাকিল রৈয়া। হরিচন্দ্র রাজার বাড়ী গেল চলিয়া॥ হরিচন্দ্র রাজা বলিয়া তুলিয়া ছাড়ে রাও। ঘবে ছিল হরিচন্দ্র রাজা বাহিরে দিলে পাও ৷ পণ্ডিত ঠাকুর বলিয়া করে প্রণাম। দিব্য সিংহাসন বসিবার দিল। কপূর তাম্বুল দিয়া জিজ্ঞাসা করিল। কেনে কেনে গুরু ব্রাহ্মণ এত দূর গমন। ময়না পাঠাইয়া দিল তোমার বরাবর। তোমার ঘরে কন্ঠা আছে অতুন পছনা। তাক যোড়িবার চায় ময়না সুন্দর। ময়নার পুত্র আছে মহলের ভিতর॥ তাকে বিয়ে দিবার চায় ময়না সুন্দর ৷ যা যা বলিয়া তাকে হুকুম দিল। এ কথা শুনিয়া ব্রাহ্মণ ময়নার মহলে গেল। ভারে লইল গুয়া সায়িঙ্গে লইল পাণ। গুয়া পাণ কাটিবার গেল ব্রাহ্মণ পঞ্চজন॥ (১) হরিশ্চন্দ্র পাল। ঢাকা জেলার অন্তর্গত সাভারে ইহার রাজধানী ছিল। ইহার দুই কন্যা অল্পনা ও পছন—সে সময়ের মধ্যে সুন্দরীকুল-শ্রেষ্ঠা ছিলেন। গোপীচন্দ্র বা গোবিন্দচন্দ্র রাজার সঙ্গে অস্থানার বিবাহ হয় এবং পঢ়ন দানে প্রদত্ত হন। গোবিন্দচন্দ্রের পুত্র হবচন্দ্র ( যাহার মন্ত্রী গবচন্দ্র ছিলেন ) শত্রুর হস্তে রাজ্যচ্যুত হন। রঙ্গপুরের নিকট হবচন্দ্রের বাড়ীর ভগ্নাবশেষ অদ্যাপি দৃষ্ট হয়; এবং সেই স্থানেই তদীয় মাতামহ হরিশ্চন্দ্র পালের সমাধি এখনও বিদ্যমান আছে।
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/১৬৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।