মনসা-মঙ্গল—বিজয় গুপ্ত – খ্রঃ ১৫শ শতাব্দী। సి) সকলেরে সেলাম দিয়া চলিল সত্বর। এইরূপে চলে গেল কাজির গোচর॥ সৈয়দ মোল্লা যত লেখাযোখা নাই। হেন কালে গেল তথা মোল্লা তফাই॥ কান্দিয়া কাজির আগে কহে দুঃখ লাগে বৈরি (১)। সংবাদ পড়িল গাইন বলরে লাচারি॥ (২) কাজিরা দুই ভাই একত্র বসিছে। মোল্লার নালিস! কান্দিতে কান্দিতে মোল্লা গেল তার কাছে॥ হিন্দুয়ানী হল রাজ্য তোমার কিসের কায। পেয়াদা পাইক যত আছে শীঘ্র করি সাজ॥ এই ভাগীরথী তীরে হিন্দুর ভূত পূজি। তোমার কাষ নাহি হেন মনে মনে বুঝি॥ দেখে ভাগীরথী তীরে অপূর্ব্ব ভূতজাতি। ঘরেতে ঢুকিয়া ছিনু করিল দুৰ্গতি। হের দেখ দাড়ি নাহি মুখে রক্ত পড়ে। দন্ত ভাঙ্গিয়াছে মোর চোপাড় চাপড়ে॥ পরিধান ইজার আমার দেখ সব ভাঙ্গ। ছাগলের (৩) রক্তে দেখ মুখ মোর রাঙ্গা॥ যতেক মারিছে মোরে কিছু নাঞি মনে। কেবল ধূপের ধোয়ায় না দেখি নয়নে। খোদার নাম জিগির (৪) করি কেহ কাছে নাই। বড় ভাগ্যে ভাণ্ডিয়া (৫) আসিন্তু তোমার ঠাঞি॥ শুনিঞা কোপিল কাজি চারিদিকে চায়। আফিংএর লায়েকে বেটা আকাশের দিক চায়। হারামজাত হিন্দুর হয় এত বড় প্রাণ। আমার গ্রামেতে বেটা করে হিন্দুয়ান॥ গোটে গোটে ধরিব গিয়া যতেক ছেমরা (৬)। এড়া রুটি (৭) খাওয়াইয়া করিব জাতি-মারা॥ ওস্তাদ মোল্লা মোর অপমান হয়। তাহারে এমন করে প্রাণে নাহি ভয়॥ (১) বড়। (২) এই কথা রাষ্ট্র হইল, এখন গায়েন লাচাড়ী বল। (৩) মনসার নিকট বলি-প্রদত্ত ছাগলের। (৪) চীৎকার। (৫) ভাণ্ডিয়া =ভাড়াইয়া। (ঙ) বালক। (৭) পরিত্যক্ত রুটি =উচ্ছিষ্ট রুটি।
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/৩১৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।