মনস-মঙ্গল—দ্বিজ বংশীবদন ১৬শ শতাব্দী। কিঞ্চিৎ নালিতা পত্র তার মধ্যে আদি। লাউ দিয়া ঘণ্ট রান্ধে রোহিতের গাদ। বাগুণ দ্বিখণ্ড করি তাত লাউ যোগ। মাগুর মৎস্ত সহ রান্ধে কোঞর ভোগ (১)॥ নবীন কুমড়া দিয়া কই মৎস্ত সনে। পিপুল বাটিয়া ঝোল রান্ধিল বন্ধানে॥ . লাফ (২) বাগুণ দীৰ্ঘে করি চারি খণ্ড। চৈ (৩) বাটিয়া রান্ধে রোহিতের অণ্ড॥ মাষ দাল দিয়া রান্ধে রোহিতের মাথা। হিঙ্গের সম্ভারে তাতে দিল তেজপাত॥ জিরা লঙ্গ বাট দিল মরিচের রসে। ভুবন মোহিত কৈল ব্যঞ্জনের বাসে॥ আদা জামিরের রসে কই মৎস্ত ভাল। অম্ন ব্যঞ্জন রান্ধে থৈকর (৪) মিশাল॥ পোনা মৎস্ত দিয়া রান্ধে করঞ্জ (৫) অম্বল। তিল চালিতা রান্ধে স্থখাদ্য কেবল ৷ পাকা তেঁতুলে রান্ধে রোহিতের পেটি। বদরীর অম্ল রান্ধে শোল মৎস্ত কাটি॥ সকল ব্যঞ্জন রান্ধে আপনার মনে। বদরীর অন্ন রান্ধে ঠেকাইল ফেণে (৬)॥ হেটে তার ব্যঞ্জন উপরে ভাসে ফেণী। নাড়িতে নাড়িতে নড়ে দুকাণের সোণী॥ (৭) পাকা মৌআলু (৮) দিয়া ঘৃত পাক করি। তাতে কৈল দধিখণ্ড চিনিয়ে সন্তারি॥ দারচিনি বাটি দিল আর তেজছাল (৯)। পিঠালী বাটিয়া তাত মরিচ মিশাল॥ আদা জামিরের রস সৈন্ধব লবণে। রান্ধিলেক “মনোহর” নাম ব্যঞ্জনে॥ (১) এই ভাবে প্রস্তুত ব্যঞ্জনকে “কুমার-ভোগ” বলিত। (২) বড় ও গোল। (৩) মসলার উপযোগী গুল্ম-বিশেষ। (৪) “অস্ত্র বেতস” = এক রকম টক ফল। শ্রীহট্টে বিস্তর হয়। (৫) করমচা। (৬) আবর্ত্তনপূর্ব্বক ফেণ সংবরণ করিল। (৭) অনবরত আবর্ত্তন-জন্ত কর্ণের কুণ্ডল দুলিতে লাগিল। (৮) এক প্রকার মিষ্ট আলু। লাল “সকরকন্দ আলু”। (৯) তেজপত্র-বৃক্ষের চর্ম্ম। ২২৩
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/৩৪৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।