মনসা-মঙ্গল—দ্বিজ বংশীবদন—১৬শ শতাব্দী। রাজা বলে এ কার্য্য আমি একদা করিব। - একজন আনি আমি খাওয়াইয়া বুঝিব। এত বলি নরপতি চাহে চারি পাশে। যার দিকে চায় সেই মরে হেন ভাষে॥ হেন কালে দেখিলেক দারুণ গিরিবর। রাজা বলে প্রাণে ভাই না হইও কাতর॥ জন্মিলে অবশু মৃত্যু আছে একবার। নারিকেল খাইয়া কেন না বুঝ বিচার। রাজার মুখের কথা শুনি অকস্মাৎ ৷ গিরিবরের মুণ্ডে যেন হৈল বজ্রাঘাত॥ কিবা শূন্তেতে আছে কিবা পৃথিবীত। আছাড় খাইয়া পুনঃ হইল মূচ্ছিত॥ কুক্ষণে পোহাইল রাত্রি বিধি হৈল বৈরী। আজি সে লুকাইবে নাম গিরিবর দ্বারী॥ কন্তু নাহি শুনিয়াছি নারিকেলের কথা। আমারে বধিতে বিধি আনিয়াছে এথা॥ রাজা হৈয়া অবিচার কোন দোষ পাইয়া। হাতে তুলি বধ করে নারিকেল দিয়া॥ নিশ্চয় মরণ মোর নারিকেল খাইলে। চাহিতে চক্ষুর নীর আপনি নিকালে ৷ না দেখিল ইষ্ট মিত্র বন্ধু বান্ধব। দ্বিজ বংশী দাসে বলে মনসা অনুভব॥ কান্দিয়া কান্দিয়া বলে দ্বারী গিরিবর। তোমার চরণে গোসাঞি (১) নিবেদন মোর॥ বিষফল হয় যদি জানহ আপনে। তবে কেন সাধু মোরে মার প্রাণসনে॥ কি ফল হইবে তোমার আমারে মারিলে। আমার দ্বিতীয় (২) নাঞি কন্দে হেন মৈলে॥ রাজ-রাজ্যেশ্বর তুমি রাজ্যের অধিকারী। আপনি খাইয়া কেন না বুঝ বিচারি॥ (১) রাজাকে সম্বোধন করিয়া বলিতেছে। (২) দ্বিতীয় ব্যক্তি নাই যে আমি মরিলে কঁদিবে। ২৩৭ গিরিবরের নারিকেল ভক্ষণে ভয়। নারিকেল-ফল-পরীক্ষার জাদেশে গিরিবরের শোক।
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/৩৫৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।