২৯২ বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়। স্বামী মোর কি বলিব ঘরে যাইতে নাহি দিব ভূমিতলে পড়ি দেবী কান্দে। রাজা ডাকে কেতিয়াল মণ্ডলিয়া সারায়াল কড়ি না দিলেহ মালা পিন্ধে ৷ বিচার নাহিক দেশে তাতে কোন লোক বৈসে কান্দি দেবী শঙ্কুর নগরে। ডাকিনী খাউক আসি শিস্য সবের বুকে বসি বাহুড়িয়া (১) না যাইবে ঘরে॥ ফুল ছড়া লৈয়া কান্ধে শিষ্যগণে ফুল পিন্ধে কালকূট নাগিনী তখন। পদ্মাবতী বাণ (২) মারে সব শিন্য ঢলি পড়ে শ্রীরামবিনোদ সুবচন॥ দ্বিজ রসিক। দ্বিজ রসিকের মনসামঙ্গল অতি বিরাট্রগ্রন্থ। আমরা ১২৫৮ সালের হস্ত-লিখিত পুথি হইতে তদীয় রচনা উদ্ধত করিলাম। গ্রন্থ-রচনার সময় পাই নাই। ভাষা দেখিয়া মনে হয় দ্বিজ রসিক অনুন ১০০ বৎসর পূর্ব্বের লেখক। ভণিতায় তাহার সম্বন্ধে এই কয়েকটি বিবরণ পাওয়া যায়: সেনভূম ও মল্লভূমের মধ্যবর্ত্ত আখড়াশাল নামক স্থানে তাহার নিবাস ছিল। কবির পূর্ব মিরাসী তালুক পাড়িগ্রাম, কাকুটী, চন্দনপুর প্রভৃতি স্থানের নামও ভণিতায় পাওয়া যায়। ইহার বৃদ্ধ-প্রপিতামহের নাম কালিদাস, পিতামহের নাম মহেশ মিশ্র, পিতার নাম প্রসাদ বা শিবপ্রসাদ। কবির অপর দুই ভ্রাতা ছিল, তাহদের নাম রাজারাম ও অযোধ্যা; এক ভগিনী, নাম সাবিত্রী। র্তাহার ভাগিনেয় শুকদেবের জন্ত এবং সীতামণি নামক একটি (সম্ভবতঃ তাহার পুত্র) শিশুর জন্যও তিনি ভণিতায়। মনসাদেবীর নিকট প্রার্থনা জানাইয়াছেন। দ্বিজ রসিকের দুইটি উপাধি দৃষ্ট হয়, তাহার একটি ‘কবিবল্লভ ও অপরটি ‘কবিকঙ্কণ। আখড়াশালের নিকটবর্ত্তী শাষপুর গ্রামের নাম কবিতার মধ্যে লেখিত আছে। কলার মান্দাসে বেহুলার খেদোক্তি। কান্দেন বেহুলা রামা পতি কোলে করি। তোমার লাগিয়া ভাসি জলের উপরি॥ (১) ফিরিয়া। ২) বিষ-প্রেরক মন্ত্র পড়িলেন।
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/৪১৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।