রাজা বলে শুন বৈশ্য বচন আমার।
বন্ধুবর্গ লাগি প্রাণ পোড়ে সদা মোর॥
বৈশ্য বলে মহারাজ করি নিবেদন।
আমার কান্দিছে প্রাণ স্ত্রী পুত্ত্র কারণ॥
ভাই বন্ধু সবে মোরে দিছে খেদাইয়া।
তবু তার লাগি প্রাণ উঠিছে কান্দিয়া॥
কি করিব কোথা যাব স্থির নাহি পাই।
দুই জনে উঠি গেলা মেধসের ঠাঁই॥
ফলে ফুলে শোফিয়াছে[১] মুনির কানন।
মেধসাশ্রম।পৃথিবীর যত সুখ আছে সেহি বন॥
ধ্যানযোগে মহামুনি আছেন তথায়।
নৃপতি যাইয়া প্রণমিলা তাঁর পায়॥
মুনি বলে কহ তুমি সুরথ রাজন।
একেলা হইয়া কেন আসিয়াছ বন॥
রাজা বোলে মুনিবর কি কহিব আমি।
পর দলে নিল রাজ্য শুন মহামুনি॥
মৃগয়ার ছলে আমি পলায়া আসি বনে।
রাজ্য ছাড়ি পলালাম ভয় পাইয়া মনে॥
অমাত্য সকলে মোরে দিছে খেদাইয়া।
তবু তার লাগি প্রাণ উঠিছে কান্দিয়া॥
হস্তী ঘোড়া রথ রথী আছে কোন্ স্থানে।
ঐরাবত হস্তীর ঘাস দিবে কোন্ জনে॥
কোথা বা রহিল মোর উচ্চৈঃশ্রবা হয়।
স্বপুত্ত্র সহিত তারা কিমত আছয়॥
আমার অনুগত ছিল যত সহচরী।
কিমতে আছয়ে তারা আমা পরিহরি॥
এহি মতে প্রাণ মোর পীড়ে অনুক্ষণ।
সমাধি বৈশ্যের সঙ্গে হৈল দরশন॥
যেহি দুঃখে বনে বনে ফিরি একেশ্বর।
সে সব দুঃখের দুঃখী এহি বৈশ্যবর॥
করিয়া অধর্ম্ম যেহি জ্ঞাতি বন্ধুগণ।
রাজ্য ধন নিল কাড়ি আসিলাম বন॥
- ↑ শোভিয়াছে।