রথবর্ণন।তাহার উপরে বান্ধে চামর গঙ্গাজল[১]।
রত্ন প্রবাল লাগে করে ঝলমল॥
নেতের ওয়ারি[২] দিল তাহার উপর।
স্থানে স্থানে দণ্ডে লাগে অমূল্য পাথর॥
রূপার আওাস[৩] রথে করে ঝলমল।
শরতে প্রকাশ যেন গগন-মণ্ডল॥
কাঞ্চনের যুদ্ধ ঘরা তাহাতে তুলিল।
বহুবিধ ধনে তাহা সুসজ্জ করিল॥
সোণার সাঁড়ক রুয়া সোণার ছাটনি।
রজতের গুণে তাতে তুলিল বান্ধনি॥
আন্ধারী পারিয়া নেতে ছাইছে চামরে।
কনক কলস দিল চালের উপরে॥
ফটিকের স্তম্ভ দিল ভবন মাঝার।
নানা বর্ণে শিলা দিল মধ্যে মধ্যে তার॥
নীল কৃষ্ণ পীত শুক্ল পাথর।
ঝলক দর্পণ তাহে দেখিতে সুন্দর॥
হীরার বুম্বুকা তাথে দেখি সুশোভন।
এক স্তম্ভে লাগাইল পঞ্চ রাজার ধন॥
সুবর্ণ আওাস ঘরে করে ঝলমল।
চতুর্দ্দিকে লাগাইল হাড়ীয়া চামর॥
তাহাতে লম্বিত গজ মুকুতার ঝরা।
অন্ধকার মধ্যে যেন দীপ্ত করে তারা॥
মধ্যে মধ্যে লাগে হীরা মুকুতা খিচনি।
যুদ্ধ ঘর আভা যেন দেখি দিনমণি॥
রথের উপরে কৈল মায়া-সরোবর।
তৃষ্ণাতুর হৈতে তাথে খাইতে চাহে জল॥
প্রহর-প্রমাণ কৈল মায়া-সরোবর।
ফটিক আকৃতি দেখি তার মধ্যে জল॥
কাঞ্চনের তরু তীরে শোভে মনোহর।
তাহাতে শোভিছে সব মাণিকের ফল॥
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/৪২৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০৬
বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়।