সেনের নিকটে শীঘ্র চলিল নয়ানী।
মনে শঙ্কা পথে পাছে দেখে ননদিনী॥
মনের গুমানে চলে পথে নাই দেখা।
শ্রীরাম সম্ভাষে যেমন আইল শূর্পণখা॥
বাহির মহলে গিয়া দিল দরশন।
তরুতলে লাউসেন কর্পূর তপোধন[১]॥
দুই ভাই বসিয়া আছেন তরুতলে।
রামকৃষ্ণ অবতীর্ণ সর্ব্বলোকে বলে॥
চতুর্ভূজ মূর্ত্তি যেন দেবচূড়ামণি।
হেন কালে মধ্য পথে দাণ্ডাএ নয়ানী॥
রূপের ছটায় তার বিদ্যুৎ খেলিল।
সুবর্ণ প্রতিমা যেন সমুখে দাণ্ডাইল॥
লাজ খেএ নয়ানী যে লাগিল কহিতে।
মালা পরে গলায় চন্দন মাথা গায়।
তোমার মুখ দরশনে জগৎ জুড়ায়॥
কপট ঘুচায়ে আজি দিবে পরিচয়।
কিবা নাম কুন জাতি কহ মহাশয়॥
এখন আমার মতি ঘরে নাই স্বামী।
পরিচয় পাইলে তোমার সঙ্গে যাব আমি॥
মাতা রঞ্জাবতী পিতা কর্ণ বীরবর।
নিজ নাম লাউসেন ময়নাগড় ঘর॥
রাজা গৌড়েশ্বর মেসো মহাপাত্র[২] মামা।
গৌড় সহর যাব পথ ছাড় রামা॥
দাখিল হইল গিয়া রাজার নগর।
কালি গিয়া ভেটিব পঞ্চম গৌড়েশ্বর[৩]॥
- ↑ কর্পূর লাউসেনের কনিষ্ঠ ভ্রাতা (সহোদর নহে)। কর্পূরের চরিত্র নির্ম্মল ছিল, এজন্য তাহাকে তপোধন বলা হইয়াছে।
- ↑ মহাপাত্র মাহুদ্যা লাউসেনের মামা এবং চির-শত্রু।
- ↑ “পঞ্চ গৌড়েশ্বর” উপাধি পূর্ব্বে আর্য্যাবর্ত্তের সর্ব্ব-প্রধান রাজা গ্রহণ করিতেন। সারস্বত, কান্যকুব্জ, গৌড়, মিথিলা এবং উৎকল এই পঞ্চ রাজ্য “পঞ্চগৌড়” নামে খ্যাত ছিল। আমাদের গৌড়েশ্বরগণের অনেকেই এই গর্ব্বিত-উপাধি-ভূষিত ছিলেন।