পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/৫১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধর্ম্মরাজের গীত—মাণিক গাঙ্গুলী—১৫৪৭ খৃষ্টাব্দ।
৩৯১

দ্রুপদনন্দিনী ছিল বাথানিয়া গাই।[১]
যার পতি বলিত পাণ্ডব পঞ্চ ভাই॥
অহল্যার বারতা শুনেছি রামায়ণে।
পরিণামে মুক্ত হৈল শ্রীরাম-চরণে॥
এমত বিস্তৱ আছে কত দিব লেখা।
নয়ন পূরিব রায় রূপ হৈলে দেখা॥
তোমায় আমায় বিস্তর করিব ন্যাশ বেশ।
এইরূপে আনন্দে বুলিব নানা দেশ॥
সেই বেশে বিরলে বঞ্চিব দুই জনে।
সরস তাম্বূল দিব কর্পূর সমান।
শচী দেই যেন হে ইন্দ্রের মুখে পাণ॥

ধর্ম্মমঙ্গল—মাণিক গাঙ্গুলী—১৫৪৭ খৃঃ।

এই কবি সম্বন্ধে বিস্তৃত বিবরণ আমরা সাহিত্য-পরিষৎ কর্ত্তৃক প্রকাশিত “মাণিক গাঙ্গুলীর ধর্ম্ম-মঙ্গল” কাব্যের ভূমিকায় লিখিয়াছি।

মেঘ-বর্ণন।

[উদ্ধত অংশের অনুস্বারগুলি শুধু গীতির ঝঙ্কার উৎপাদনের জন্য,—ইহাকে কেহ সংস্কৃতের অপভ্রংশ মনে করিবেন না। গায়নের তাল-লয়-বিশিষ্ট মধুর কণ্ঠস্বরে এই অনুস্বারগুলি ঝঙ্কার একরূপ মন্দ শুনায় না।]

আজ্ঞা পেয়ে শর্ম্মী[২] হয়ে সমীরণ মেঘং।
চলে তথি হয়ে অতি খরতর বেগং॥
গুড়্‌ গুড়্‌ হুড়্‌ হুড়্‌ করে কুল কুলং।
চারি মেঘ চৌদিকে বরিষয়ে জলং॥
শিলকণা ঝন্‌ ঝনা পড়ে অনিবারং।
ভাঙ্গে ঘর তরুবর ঝড়ে অন্ধকারং॥
অবিরল সদাক্ষণ তড়িৎ প্রকাশং।
পড়ে বাজ মহীনাশ নির্ঘোষ নিষ্পেষং॥
ত্রিজগৎ চমকিত ভয়ে ভীত লোকং।
সবে কয় বুঝি প্রায় হইল বিপাকং॥

  1. বাথানের গরু। হেমন্তকালে মাঠে গরু রাখিবার যে ঘর করা হয় তাহাকে 'বাথান' বলে। এই শব্দ কবিকঙ্কণ-চণ্ডীতেও পাওয়া গিয়াছে।
  2. সুখী।