লাউসেন অপূর্ব্ব তপস্যার বলে হাকণ্ডে যাইয়া সূর্য্যদেবকে পশ্চিমে উদিত হইতে বাধ্য করিয়াছেন; লাউসেনের মাতুল এবং তাঁহার চিরশত্রু মহামদ মোহুদ্যা) একথা অবিশ্বাস্য বলিয়া গৌড়েশ্বরের নিকট প্রতিপন্ন করিতে চেষ্টত। সেই চেষ্টা ও তাহার ফলাফল নিম্নের উপাখ্যানে বিবৃত হইয়াছে।
হরিহর বাইতির সাক্ষ্য।
মন দিবে মহারাজা মধুর বচনে।
ভাল ছাড়া মন্দ নাঞি ভাগিনার সনে॥
রাজমন্ত্রী মাহুদ্যার উক্তি।তুমি বল লাউসেন সত্যবাদী হয়।
আমি বলি যত কিছু মিথ্যা সব কয়॥
বাল্মীকি বশিষ্ঠ ভৃগু ব্যাস আদি মুনি।
পরাশর পুলস্ত্য পুরাণে নাম শুনি॥
কঠোর তপস্যা করে জরাজীর্ণ দেহ।
পশ্চিম উদয় দিতে পারে নাই কেহ॥[১]
লাউসেন পশ্চিম উদয় দিয়া এল।
তবে সত্য মিথ্যা নয় তুমি যদি বল॥[২]
নৃপ কয় নয়নে দেখেছি নিরুপম।
মহামদ কয় তবে হয়েছিল ভ্রম॥
রাজার প্রতিবাদ।প্রহ্লাদ কুমার আছে পশ্চিম বাজারে।
পুরাণ পড়িয়া থাকে প্রতি শনিবারে॥
আকাশে আকার উঠে অগ্নির শিখা।
দিবস হইল হেন ভ্রম হয় দেখা॥
সন্দেহ সকল যায় সাক্ষী দিলে মানি।
ভুলে গেল ভূপতি ভণ্ডের কথা শুনি॥
সেন কন সত্য ধর্ম্ম অসত্য বিপক্ষী।
হরিহর বাইতি ইহার হয় সাক্ষী॥
দক্ষিণ দুয়ারে দিত দুসন্ধ্যা ধুমুল।[৩]
পশ্চিম উদয় হলো হাকণ্ডের[৪] কুল॥
- ↑ কেহই সূর্য্যকে পশ্চিম হইতে উদয় করাইতে পারেন নাই।
- ↑ আপনি যদি বলেন ইহা সত্য, তবেই সত্য বলিয়া স্বীকার করিতে পারি।
- ↑ দক্ষিণ দ্বারে দুই বেলা ঢাক বাজাইত।
- ↑ হাকণ্ড কোন নদীর নাম বা দেশের নাম, বলা যায় না। এই শব্দ “সপ্তখগু” শব্দের অপভ্রংশ হইতে পারে। এই স্থান হইতেই লাউসেন পশ্চিমে সূর্য্যোদয় দেখাইয়াছিলেন। ধর্ম্মমঙ্গলের কবিগণ “হাকণ্ড পুরাণে"র দোহাই দিয়া থাকেন।