দুম দাম বরিষে মুষলধারে কিল।
নত হয়ে হরিহর লোটে যেন চিল॥
দ্বিসুত কাঁকাঁলে দড়ি দঢ় করে ধরে।
দাখিল করিয়া দিল রাজার দরবারে॥
দ্বাদশ মোহর টাকা দিলেক সকল।
কোটাল বক্মিস পাইল কর্ণের কুণ্ডল॥
মনে সুখী মহামদ মহীনাথে কয়।
বাইতি বেটা চঞ্চল চোরের গুরু হয়॥
ধর্ম্ম গেল কর্ম্ম হতে ধন্য হলো কলি।
দারুণ চোরের শাস্তি দিতে হয় শূলি[১]॥
হরিহরের শূলে প্রাণদণ্ডের আদেশ।হুকুম দিলেন রাজা না করে বিচার।
গাছ কেটে গঠে শূল গোবিন্দ কামার॥
আট হাত উচ্চ রাখে সূক্ষ্ম করে অগ্র।
হরিহর বাইতি হইল দেখে ব্যগ্র[২]॥
অনিবার অশ্রুধারা পড়ে বুক বেয়ে।
(বলে) কেন কৃষ্ণ হেন কৈলে দীনবন্ধু হয়ে॥
ভৈরবীর তীরে প্রস্তুত করে শূলি।
চোরে লয়ে চলিল কোটাল মহাবলী॥
বাজা পাত্র চলিল যতেক সভাজন।
ভৈরবীর কূলে এসে দিল দরশন॥
কালচক্র কোটালে কহিল মহামদ।
এ কতিল রাখ নয় তস্কর আপদ[৩]॥
কোটাল এতেক শুনে কথদূরে চলে।
সকাতরে হরিহর সবিনয় বলে॥
বিফলে জনম গেল বিষয়ে বিফল।
উদর পূরিয়া আজি খাই গঙ্গাজল।
কোটাল এতেক শুনে করুণা বচন।
দয়া ভেবে দুই দণ্ড কৈল বিলম্বন॥
ভৈরবী গঙ্গার জলে নামে হরিহর।
আগুলে রহিল দূত দণ্ডক দুষ্কর॥
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/৫২৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০০
বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়।