৪৯২ বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়। দ্বারি-হস্তে শ্লোক দিয়া রাজাকে জানালাম। রাজগঞ্জ অপেক্ষা করি দ্বারেতে রছিলাম॥ সপ্তঘটি বেলা যখন দেয়ালে পড়ে কাটি। শীঘ্র ধাই আইল দ্বারী হাতে সুবর্ণ-লাঠি ৷ কার নাম ফুলিয়ার মুখটি কৃত্তিবাস। রাজার আদেশ হৈল করহ সন্তাষ ৷ নয় দেউড়ী পার হয়ে গেলাম দরবারে। সিংহসম দেখি রাজা সিংহাসন-পরে ৷ রাজার ডাহিণে আছে পাত্র জগদানন্দ। তাহার পাছে বসিয়াছে ব্রাহ্মণ সুনন্দ॥ বামেতে কেদার খাঁ ডাহিণে নারায়ণ। পাত্র মিত্র সহ রাজা পরিহাসে মন ৷ গন্ধর্ব্ব রায় বসে আছে গন্ধর্ব্ব অবতার। রাজসভা পূজিত তিহু গৌরব অপার। তিন পাত্র দাড়াইয়া আছে রাজার পাশে। পাত্র মিত্র লয়ে রাজা করে পরিহাসে॥ ডাহিণে কেদার রায় বামেতে তরণী। সুন্দর শ্রীবৎস্ত আদি ধর্ম্মাধিকারিণী॥ মুকুন্দ রাজার পণ্ডিত প্রধান সুন্দর। জগদানন্দ রায় মহাপাত্রের কোঙর॥ রাজার সভাখান যেন দেব অবতার। দেখিয়া আমার চিত্তে লাগে চমৎকার॥ পাত্রেতে বেষ্টিত রাজা আছে বড় সুখে। অনেক লোক দাণ্ডাইয়া রাজার সম্মুখে॥ চারি দিকে নাট্য গীত সর্ব্বলোক হাসে। চারি দিগে ধাওয়াধাই রাজার আওসে (১)॥ আঙ্গিনায় পড়িয়াছে রাঙ্গ মাজুরি। তার উপর পড়িয়াছে নেতের পাছুড়ি। (১) আওসে = গৃহে। অনেক স্থলেই আওসি শব্দ “গৃহ’ অর্থে ব্যবহৃত হইত; যথা, “তার মধ্যে দেখ পদ্মাবতীর আওস। সমীর সঞ্চার নাই পক্ষীর প্রকাশ॥”—আলওয়াল-কুত পদ্মাবতী।
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/৬১৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।