মহাভারত—রাজেন্দ্র দাস—১৬শ শতাব্দী। ○8○ নির্ম্মল বৃক্ষের তল পুষ্প পড়ি আছে। লম্ফে লম্ফে বানর বেড়ায় গাছে গাছে॥ নানা বর্ণ সরোবর দেখি তার কাছে। জলচর পক্ষী সব যাহাতে শোভিয়াছে॥ হেন জল না দেখিলুম নাহিক কমল। হেন পদ্ম না দেখিল নাহিক ভ্রমর॥ হেন ভৃঙ্গ নাহি এখানে না ডাকে মত্ত হৈয়া। (১) কেবা মোহ না যায় যে সে বন দেখিয়া॥ সুখ-দরশনে রাজা সব বিস্মরিল। তপোবনের শোভা দেখি হৃদয় মোহিল॥ হেনকালে শকুন্তলা প্রমোদিত চিত্ত। অনস্থয়া প্রিয়ম্বদা সর্থীর সহিত॥ কলসী ভরিয়া জলে বসিছে তরুমূলে। নন্দন বনের সম বৃক্ষ ফলে ফুলে ৷ সখীগণের সঙ্গে তীর্থযাত্রা যাইতে কহিছে সে কথমুনি। শকুন্তলা। প্রিয় বাক্যে তিন কস্তা নিকটেত আনি॥ জল দিয়া তরু সব পালিবা যতনে। শকুন্তলা পালন করিবা দুই জনে॥ সেই বাক্য চিত্তে ধরি নিত্য সিচে জল। শ্রম পাইয়া তিন জন হইল বিকল॥ মালতী নামে নদী বহে দক্ষিণ উত্তরে। তপোবন মধ্যে আছে দিব্য সরোবরে॥ শোভিছে কমল ভ্রময়ে নানা পক্ষী। জলযুত করে তথা তিন চন্দ্রমুখী॥ মুখ শোভ করে যেন কনক-কমল। আখির কটাক্ষে লজ্জা পাইল ভ্রমর॥ রাঙ্গাপদ করন্ত অধর বিম্বফল। মৃণাল-সদৃশ ভুজতল সুকোমল ৷ মধ্যভাগ দেখি যেন বিলক্ষণ উরু। ইন্দ্র-ধনুক যেন কিবা শিরে চারু॥ (১) ইহা ভটিকাব্যের প্রসিদ্ধ কবিতাটির পুনরাবৃত্তি।
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/৭৬৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।