পুনশ্চ/সুন্দর
সুন্দর
প্লাটিনমের আঙটির মাঝখানে যেন হীরে।
আকাশের সীমা ঘিরে মেঘ,
মাঝখানের ফাঁক দিয়ে রোদ্দুর আসচে মাঠের উপর।
হুহু করে বইচে হাওয়া,
পেঁপে গাছগুলোর যেন আতঙ্ক লেগেছে,
উত্তরের মাঠে নিম গাছে বেধেচে বিদ্রোহ,
তাল গাছগুলোর মাথায় বিস্তর বকুনি।
বেলা এখন আড়াইটা।
ভিজে বনের ঝলমলে মধ্যাহ্ন
উত্তর দক্ষিণের জানলা দিয়ে এসে
জুড়ে বসেচে আমার সমস্ত মন।
জানিনে কেন মনে হয়
এই দিন দূর কালের আর-কোনো একটা দিনের মতো।
এ রকম দিন মানে না কোনো দায়কে,
এর কাছে কিছুই নেই জরুরী,
বর্তমানের নোঙর-ছেঁড়া ভেসে-যাওয়া এই দিন।
একে দেখচি যে-অতীতের মরীচিকা বলে
সে অতীত কি ছিল কোনোকালে কোনোখানে,
সে কি চিরযুগেরই অতীত নয়।
প্রেয়সীকে মনে হয় সে আমার জন্মান্তরের জানা,
যে কালে স্বর্গ, যে কালে সত্যযুগ,
যে কাল সকল কালেরই ধরা-ছোঁওয়ার বাইরে।
তেম্নি এই যে সোনায় পান্নায় ছায়ায় আলোয় গাঁথা
অবকাশের নেশায় মন্থর আষাঢ়ের দিন,
বিহ্বল হয়ে আছে মাঠের উপর ওড়না ছড়িয়ে দিয়ে,
এর মাধুরীকেও মনে হয় আছে তবু নেই,
এ আকাশ-বীণায় গৌড়-সারঙের আলাপ,
সে আলাপ আসচে সর্ব্বকালের নেপথ্য থেকে॥
৭ ভাদ্র, ১৩৩৯