বিরহিণী

তিন বছরের বিরহিণী জান্‌লাখানি ধ’রে
কোন্ অলক্ষ্য তারার পানে তাকাও অমন ক’রে?
অতীত কালের বোঝার তলায় আমরা চাপা থাকি,
ভাবী কালের প্রদোষ আলোয় মগ্ন তোমার আঁখি।
তাই তোমার ঐ কাঁদন-হাসির সবটা বুঝি না যে,
স্বপন দেখে অনাগত তোমার প্রাণের মাঝে।
কোন্ সাগরের তীর দেখেছো জানে না তো কেউ,
হাসির আভায় নাচে সে কোন্ সুদূর অশ্রু ঢেউ।
সেখানে কোন্ রাজপুত্তর চিরদিনের দেশে
তোমার লাগি’ সাজ্‌তে গেছে প্রতিদিনের বেশে।
সেখানে সে বাজায় বাঁশি রূপ-কথারি ছায়ে,
সেই রাগিণীর তালে তোমার নাচন লাগে গায়ে।
আপনি তুমি জানো না তো আছো কাহার আশায়,
অনামারে ডাক দিয়েছো চোখের নীরব ভাষায়।
হয়-তো সে কোন সকালবেলা শিশির-ঝলা পথে
জাগরণের কেতন তুলে আস্‌বে সোনার রথে,
কিম্বা পূর্ণ চাদের লগ্নে, বৃহস্পতির দশায়;—
দুঃখ আমার, আর সে যে হোক, নয় সে দাদামশায়।


বুয়েনােস্ এয়ারিস্, ২০ ডিসেম্বর, ১৯২৪।