পূরবী/পথিক/মৃত্যুর আহ্বান

মৃত্যুর আহ্বান

জন্ম হ’য়েছিলো তোর সকলের কোলে
আনন্দ-কল্লোলে।
নীলাকাশ, আলো, ফুল, পাখী,
জননীর আঁখি,
শ্রাবণের বৃষ্টি-ধারা, শরতের শিশিরের কণা,
প্রাণের প্রথম অভ্যর্থনা।
জন্ম সেই
এক নিমিষেই
অন্তহীন দান,
জন্ম সে যে গৃহ-মাঝে গৃহীরে আহ্বান॥

মৃত্যু তোর হোক দূরে নিশীথে নির্জ্জনে,
হোক সেই পথে যেথা সমুদ্রের তরঙ্গ গর্জ্জনে
গৃহহীন পথিকেরি
নৃত্য-ছন্দে নিত্য-কাল বাজিতেছে ভেরী।

অজানা অরণ্যে যেথা উঠিতেছে উদাস মর্ম্মর,
বিদেশের বিবাগী নির্ঝর
বিদায় গানের তালে হাসিয়া বাজায় করতালি।
যেথায় অপরিচিত নক্ষত্রের আরতির থালি
চলিয়াছে অনন্তের মন্দির সন্ধানে,
পিছু ফিরে চাহিবার কিছু যেথা নাই কোনোখানে।
দুয়ার রহিবে খোলা; ধরিত্রীর সমুদ্র-পর্ব্বত
কেহ ডাকিবে না কাছে, সকলেই দেখাইবে পথ।
শিয়রে নিশীথ-রাত্রি রহিবে নির্ব্বাক,
মৃত্যু সে যে পথিকেরে ডাক॥


আণ্ডেস্ জাহাজ, ৪ নভেম্বর, ১৯২৪।