পূরবী/সঞ্চিতা/সাগর সঙ্গম

সাগর সঙ্গম

হে পথিক কোন্ খানে
চ’লেছো কাহার পানে?
পোহালো রজনী  উঠে দিনমণি
চ’লেছি সাগর স্নানে
উষার আভাসে  তুষার বাতাসে
পাখীর উদার গানে
শয়ন তেয়াগি  উঠিয়াছি জাগি,
চ’লেছি সাগর স্নানে।



শুধাই তোমার কাছে
সে সাগর কোথা আছে?
যেথা এই নদী  বহি’ নিরবধি
নীল জলে মিশিয়াছে।
যেথা হ’তে রবি  উঠে নব ছবি
মিলায় যাহার পাছে;
তপ্ত প্রাণের  তীর্থ স্নানের
সাগর সেথায় আছে।

পথিক, তোমার দলে
যাত্রী ক’জন চলে?
গণি তাহা ভাই শেষ নাহি পাই
চ’লেছে জলে স্থলে।
তাহাদের বাতি জ্বলে সারারাতি
তিমির আকাশ তলে
তাহাদের গান  সারা দিনমান
ধ্বনিছে জলে স্থলে।

8



সে সাগর কহ তবে
আর কতদূরে হবে?
আর কতদূরে  আর কতদূরে
সেই তো শুধায় সবে।
ধ্বনি তা’র আসে দখিন বাতাসে
ঘন ভৈরব রবে।
কভু ভাবি কাছে, কভু দূরে আছে
আর কত দূরে হবে।

পথিক গগনে চাহ
বাড়িছে দিনের দাহ।
বাড়ে যদি দুখ  হবে না বিমুখ
নিবাবো না উৎসাহ।
ওরে, ওরে ভীত,  তৃষিত তাপিত
জয়-সঙ্গীত গাহ।
মাথার উপরে  খর রবি-করে
বাড়ুক দিনের দাহ।



কি করিবে চ’লে চ’লে
পথেই সন্ধ্যা হ’লে?
প্রভাতের আশে  স্নিগ্ধ বাতাসে
ঘুমাবো পথের কোলে।
উদিবে অরুণ  নবীন করুণ
বিহঙ্গ কলরোলে
সাগরের স্নান  হবে সমাধান
নূতন প্রভাত হ’লে।


(প্র—বৈশাখ, ১৩০৮)