পূর্ব-বাংলার গল্প

পূর্ব-বাংলার গল্প

পূর্ব-বাংলার গল্প

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ

কলিকাতা

প্রথম প্রকাশ

১ বৈশাখ ১৩৭৯: ১৮৯৪ শক

প্রচ্ছদলিপি॥ শ্রীখালেদ চৌধুরী

© বিশ্বভারতী ১৯৭২

প্রকাশক রণজিৎ রায়

বিশ্বভারতী। ১০ প্রিটোরিয়া স্ট্রীট। কলিকাতা ১৬

মুদ্রক শ্রীশৈলেন্দ্রনাথ গুহরায়

৩২ আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোড। কলিকাতা ৯

৩.১

যৌবনে জমিদারি তত্ত্বাবধানের ভার লইয়া বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলের জীবনযাত্রার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের যে পরিচয় তাহা এই কালে রচিত তাঁহার কোনো কোনো গল্পের উৎস, ছিন্নপত্রে তাহার উল্লেখ সুপরিচিত। বাংলাদেশের গ্রামজীবনের এই অভিজ্ঞতা রবীন্দ্রনাথের আরো কোনো কোনো গল্পে প্রতিবিম্বিত।

 বর্তমান গ্রন্থে এই গল্পগুলি সংকলিত হইল।

 ছিন্নপত্রের পাঠকের নিকট এই গল্পগুলি রচনার পটভূমি সুবিদিত— এখানে, এই পর্বের জীবনযাত্রার যে বর্ণনা রবীন্দ্রনাথ উত্তরকালে দিয়াছেন সুত্ররূপে তাহা উদ্বৃত হইল (শ্রীপ্রভাতচন্দ্র গুপ্ত, “প্রভাত-রবি”, প্রবাসী, বৈশাখ ১৩৪৪)—

“শিলাইদহে পদ্মার··· বোটে ছিলাম আমি একলা, সঙ্গে ছিল এক বুড়ো মাঝি, আমার মত চুপচাপ প্রকৃতির, আর ছিল এক চাকর, ফটিক তার নাম। সেও স্ফটিকের মতই নিঃশব্দ। নির্জনে নদীর বুকে দিন বয়ে যেত নদীর ধারারই মত সহজে। বোট বাঁধা থাকত পদ্মার চরে। সেদিকে ধু-ধু করত দিগন্ত পর্যন্ত পাণ্ডুবর্ণ বালুরাশি, জনহীন, তৃণশষ্যহীন। মাঝে মাঝে জল বেধে আছে, সেখানে শীত ঋতুর আমন্ত্রিত জলচর পাখির দল। নদীর ওপারে গাছপালার ঘন ছায়ায় গ্রামের জীবনযাত্রা। মেয়েরা জল নিয়ে যায়, ছেলেরা জলে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কাটে— চাষীরা গোরু মোষ নিয়ে পার হয়ে চলে অন্য তীরের চাষের ক্ষেত্রে, মহাজনী নৌকা গুণের টানে মন্থর গতিতে চলতে থাকে, ডিঙি-নৌকা পাটকিলে রঙের পাল উড়িয়ে হু-হু করে জল চিরে যায়, জেলে-নৌকা জাল বাচ করতে থাকে, যেন সে কাজ নয়, যেন সে খেলা, এর মধ্যে প্রজাদের প্রাত্যহিক সুখদুঃখ আমার গোচরে এসে পড়ত তাদের নানাপ্রকার নালিশ নিয়ে, আলোচনা নিয়ে। পোস্ট্ মাস্টার গল্প শুনিয়ে যেত গ্রামের সত্য ঘটনা এবং তার নিজের সংকট সমস্যা নিয়ে, বোষ্টমী এসে আশ্চর্য লাগিয়ে যেত তার রহস্যময় জীবনবৃত্তান্ত বর্ণনা ক’রে। বোট ভাসিয়ে চলে যেতুম, পদ্মা থেকে পাবনার কোলের ইছামতীতে, ইছামতী থেকে বড়লে হুড়োসাগরে, চলনবিলে, আত্রাইয়ে, নাগর নদীতে, যমুনা পেরিয়ে সাজাদপুরের খাল বেয়ে সাজাদপুরে। দুই ধারে কত টিনেরছাদওয়ালা গঞ্জ, কত মহাজনী নৌকার ভিড়ের কিনারায় হাট, কত ভাঙনধরা তট, কত বর্ধিষ্ণু গ্রাম। ছেলেদের দলপতি ব্রাহ্মণ-বালক, গোচারণের মাঠে রাখাল ছেলের জটলা, বনঝাউ-আচ্ছন্ন পদ্মাতীরের উঁচু পাড়ির কোটরে কোটরে গাঙ-শালিকের উপনিবেশ। আমার গল্পগুচ্ছের ফসল ফলেছে আমার গ্রাম-গ্রামান্তরের পথে-ফেরা এই বিচিত্র অভিজ্ঞতার ভূমিকায়।”

সূচীপত্র

২০
২৯
৩৯
৪৮
৬৩
৯০
১২৬
১৪৯
১৫৫
১৬৩

এই লেখাটি বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত কারণ এটির উৎসস্থল ভারত এবং ভারতীয় কপিরাইট আইন, ১৯৫৭ অনুসারে এর কপিরাইট মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। লেখকের মৃত্যুর ৬০ বছর পর (স্বনামে ও জীবদ্দশায় প্রকাশিত) বা প্রথম প্রকাশের ৬০ বছর পর (বেনামে বা ছদ্মনামে এবং মরণোত্তর প্রকাশিত) পঞ্জিকাবর্ষের সূচনা থেকে তাঁর সকল রচনার কপিরাইটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। অর্থাৎ ২০২৪ সালে, ১ জানুয়ারি ১৯৬৪ সালের পূর্বে প্রকাশিত (বা পূর্বে মৃত লেখকের) সকল রচনা পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত হবে।