অকারণে অকালে মোর পড়ল যখন ডাক
তখন আমি ছিলেম শয়ন পাতি।
বিশ্ব তখন তারার আলোয় দাঁড়ায়ে নির্ব্বাক্
ধরায় তখন তিমির-গহন রাতি॥
ঘরের লোকে কেঁদে কইল মোরে
“আঁধারে পথ চিনবে কেমন ক’রে?”
আমি কইমু “চলব আমি নিজের আলো ধ'রে,
হাতে আমার এই যে আছে বাতি॥”

বাতি যতই উচ্চ শিখায় জ্বলে আপন তেজে,
চোখে ততই লাগে আলোর বাধা।
ছায়ায় মিশে চারিদিকে মায়া ছড়ায় সে যে,
আধেক-দেখা করে আমায় আঁধা।
গর্ব্বভরে যতই চলি বেগে
আকাশ তত ঢাকে ধূলার মেঘে,
শিখা আমার কেঁপে ওঠে অধীর হাওয়া লেগে,
পায়ে পায়ে সৃজন করে বাধা॥

হঠাৎ শিরে লাগল আঘাত বনের শাখাজালে,
হঠাৎ হাতে নিবল আমার বাতি ৷
চেয়ে দেখি পথ হারিয়ে ফেলেছি কোন্ কালে
চেয়ে দেখি তিমির-গহন রাতি
কেঁদে বলি, মাথা করে নীচু
“শক্তি আমার রইল না আর কিছু,”
সেই নিমেষে হঠাৎ দেখি কখন পিছু পিছু
এসেছে মোর চিরপথের সাথী॥