বঙ্গ ভাষার ব্যাকরণ/সংজ্ঞাবিষয়
দ্বিতীয় ভাগ
১ পাঠ।
সংজ্ঞা বিষয়।
১ প্রশ্ন। সংজ্ঞা কি?
উত্তর। বস্তুর নাম মাত্র; যথা। মনুষ্য, বৃক্ষ, পুস্তক, কালী, কলম, ইত্যাদি।
২ প্র। সংজ্ঞা কয় প্রকারে বিভক্ত আছে?
উ। নামবাচক, জাতিবাচক, ভাববাচক, এবং ক্রিয়াবাচক, এই চারি প্রকারে ভিন্ন করা যায়।
৩ প্র। নামবাচক কি?
উ। প্রত্যেক মনুষ্যের নাম, ও নগর ও দেশ ও নদীর নাম ইত্যাদি নামবাচক হয়, যথা। কৃষ্ণচন্দ্র, কলিকাতা, গৌড়, যমুনা।
৪ প্র। জাতিবাচক কি?
উ। মনুষ্য, পশু, পক্ষী, ইত্যাদি, জাতিবাচক, অর্থাৎ মনুষ্য শব্দে তাবৎ মনুষ্যকে বুঝায়, পশুশব্দে তাবৎ পশুকে বুঝায়, পক্ষী শব্দে তাবৎ পক্ষিকে বুঝায়।
৫ প্র। ভাববাচক কি?
উ। গুণবাচক শব্দের পর, তা, এবং ত্ব, এই দুই প্রত্যয় করিলে ভাববাচক হয়; যথা, গুণবাচক ভদ্র শব্দের পর, তা এবং ত্ব করিয়া ভদ্রতা এবং ভদ্রত্ব হয়।
৬ প্র। কিন্তু কখনৎ জাতিবাচকহইতে ভাববাচক রচিত হয় কি না?
উ। হাঁ, সে জাতিবাচক শব্দের উত্তর কেবল ত্ব প্রত্যয় করিলেই, ভাববাচক হয়, যথা, জাতিবাচক মনুষ্য শব্দের উত্তর ত্ব করিয়া মনুষ্যত্ব এবং ঈশ্বরত্ব হয়।
৭ প্র। ক্রিয়াবাচক কি?
উ। ধাত্বর্থ মাত্র বোধক শব্দকেই ক্রিয়াবাচক কহা যায়, যথা, করণ, শয়ন, গমন, রক্ষণ, শ্রবণ, দর্শন, ইত্যাদি।
৮ প্র। সংজ্ঞা আর কোন মতে বিভিন্ন হয় কি না?
উ। প্রাণিবাচক এবং অপ্রাণিবাচক, এই দুই ভাগেই বিভিন্ন হয়।
৯ প্র। প্রাণিবাচক কি?
উ। প্রাণি মাত্র বোধক শব্দকেই প্রাণিবাচক কহা যায়, যথা, জীব, জন্তু, কীট, প্রভৃতি।
১০ প্র। অপ্রাণিবাচক কি?
উ। নির্জীব বস্তু বোধকশব্দ মাত্রই অপ্রাণিবাচক হয়; যথা, পর্ব্বত, প্রস্তর, মৃত্তিকা, ইত্যাদি।