বনলতা সেন/বাহিরের ডাক ছেড়ে
বাহিরের ডাক ছেড়ে
বাহিরের ডাক ছেড়ে একদিন রাত্রির পাখির মতাে ঘরের ভিতর
চ’লে গেছিলাম আমি,—সেইদিন ভালাে লেগেছিল শান্তি সান্ত্বনার স্বাদ
তুমি কাছে ছিলে বলে,তাই মনে হয়েছিল মানুষের হৃদয়ের সাধ
যে ভালােবেসেছে তার ভালােবাসা লয়ে শুধু একখানা ঘর
বাঁধিয়া রাখিতে চায়,—নির্ভর করিতে চায় হৃদয়ের প্রেমের উপর।
কারণ, তারার মতাে স্থির প্রেম,—বালির মতন এই পৃথিবীর বাঁধ
খসে পড়ে চারিদিকে; প্রেম যে দিয়েছে তারে মনে-মনে করি আশীর্বাদ
আজও আমি,—ভালােবেসে মনে পড়ে কাটায়েছি রাত আর দিন পরস্পর
আমরা দুজনে;—আজ তুমি চলে গেছ—ফলে গেছে.যে এক ফসল,
ঝরে গেছে,—চারিদিকে ধোঁয়াধুলাে—পৃথিবীর প্রতিহত মানুষের ভিড়
আমিও এসেছি আজ তাহাদের মাঝখানে পূর্ণ ক’রে তাহাদের স্থল;
তবুও আমারে যদি ডেকে নাও পথ থেকে আমি প্রিয়া রব কি বধির।
সারারাত কেউ তুলে ক্লান্ত হয়ে নক্ষত্রেরে ডাকে ওই সমুদ্রের জল,
দূর আকাশের ’পর তােমার মতন প্রিয়া তবুও নক্ষত্র থাকে স্থির!