বনলতা সেন/শ্যামলী
(পৃ. ২৯)
শ্যামলী
শ্যামলী, তােমার মুখ সেকালের শক্তির মতন;
যখন জাহাজে চড়ে যুবকের দল।
সুদূর নতুন দেশে সােনা আছে ব'লে;
মহিলারি প্রতিভায় সে ধাতু উজ্জ্বল
টের পেয়ে, দ্রাক্ষা দুধ ময়ূর-শয্যার কথা ভুলে
সকালের রূঢ় রৌদ্রে ডুবে যেত কোথায় অকূলে।
তােমার মুখের দিকে তাকালে এখনাে
আমি সেই পৃথিবীর সমুদ্রের নীল,
দুপুরের শূন্য সব বন্দরের ব্যথা,
বিকেলের উপকণ্ঠে সাগরের চিল,
নক্ষত্র, রাত্রির জল, যুবাদের ক্রন্দন সব—
শ্যামলী, করেছি অনুভব।
অনেক অপরিমেয় যুগ কেটে গেল;
মানুষকে স্থির—স্থিরতর হতে দেবে না সময়;
সে কিছু চেয়েছে বলে এত রক্ত নদী।
অন্ধকার প্রেরণার মতাে মনে হয়
দূর সাগরের শব্দ—শতাব্দীর তীরে এসে ঝরে;
কাল কিছু হয়েছিল,—হবে কি শাশ্বতকাল পরে।