বর্ণপরিচয় (প্রথম ভাগ, ১৮৭৬)/২০ পাঠ
২০ পাঠ।
গোপাল যেমন সুবোধ, রাখাল তেমন নয়। সে বাপ মার কথা শুনে না; যা খুসি তাই করে; সারা দিন উৎপাত করে; ছোট ভাই ভগিনী গুলির সহিত ঝগড়া ও মারামারি করে। এ কারণে, তার পিতা মাতা তাকে দেখতে পারেন না।
রাখাল, পড়িতে যাইবার সময়, পথে খেলা করে; মিছামিছি দেরি করিয়া, সকলের শেষে পাঠশালায় যায়। আর আর বালকেরা পাঠশালায় গিয়া পড়িতে বসে। রাখালও দেখাদেখি বই খুলিয়া বসে; বই খুলিয়া হাতে করিয়া থাকে, এক বারও পড়ে না।
লেখা পড়ায় রাখালের বড় অমনোযোগ। সে এক দিনও মন দিয়া পড়ে না। এবং এক দিনও ভাল পড়া বলিতে পারে না। গুরু মহাশয় যখন নুতন পড়া দেন, সে তাহাতে মন দেয় না, কেবল এ দিকে, ও দিকে চাহিয়া থাকে।
খেলিবার ছুটী হইলে, রাখাল বড় খুসী। খেলিতে পাইলে, সে আর কিছুই চায় না। খোলবার সময়, সে সকলের সহিত ঝগড়া ও মারামারি করে; এ কারণে, গুরু মহাশয় তাহাকে সতত গালাগালি দেন।
ছুটী হইলে, বাড়ীতে গিয়া, রাখাল পড়িবার বই কোথায় ফেলে, কিছুই ঠিকানা থাকে না; কোনও দিন পাঠশালায় ফেলিয়া। অইসে; কোনও দিন পথে হারাইয়া আইসে। রাখালের পিতা, এক মাসের ভিতর, চারি বার বই কিনিয়া দিয়াছেন। তিনি কাহিয়াছেন, এবার বই হারাইলে আর কিনিয়া দিবেন না।
রাখালকে কেহ ভাল বাসে না। কোনও বালকেরই রাখালের মত হওয়া উচিত নয়। যে রাখালের মত হইবে, সে লেখা পড়া শিখিতে পারিবেক না।